নাগাল্যান্ডে গ্রামবাসীদের মেশিনগান ও গ্রেনেড দিয়ে আক্রমণ, সেনাদের ‘অভিযান’ ঘিরে রহস্য

|

ছবি: সংগৃহীত।

ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল নাগাল্যান্ডে ১৪ জন গ্রামবাসীকে গুলি করে সেনাসদস্যদের হত্যার ঘটনাকে ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে নাগাল্যান্ড পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আর এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলে সেনা সদস্যদের কর্মকাণ্ডকে ঘিরে রহস্যজনক তথ্য সামনে এসেছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর কয়লা খনি থেকে কাজ শেষে ফেরার সময় সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট আসাম রাইফেলস শ্রমিকদের বহনকারী পিকআপ ট্রাকে গুলি চালায়। এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, পিকআপ ট্রাকটিতে থামতে ইশারা দিলেও সেটি নির্দেশ না মানায় গুলি ছোড়া হয়েছে। তবে এতে প্রশ্ন উঠে এসেছে, নির্দেশ না মানলেই কি গুলি ছোড়ার এখতিয়ার আছে সেনা সদস্যদের?

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক রিপোর্টে ভারতের সাম্যতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা

তাছাড়া পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গুলি ছোড়া হয়েছে সামনে থেকে। গাড়িটির উইন্ডশিল্ড ঝাঁঝরা করে দেয়া হয়েছে। শুধু গুলি নয়, কমান্ডোরা খনি শ্রমিকদের উপর মেশিনগান, রাইফেল ও পিস্তল সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই গুলি চালিয়েছিল। ছোড়া হয়েছিল রাইফেল গ্রেনেডও। পুলিশ বলছে, ধাওয়া করলে গুলি ছোড়া হবে পেছন থেকে। তাছাড়া সেখানে সেদিন কোনো চেকপোস্টও বসানো হয়নি।

আরও একটি সন্দেহজনক তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনাস্থল থেকে সেনা সদস্যদের গাড়ির একটি নাম্বার প্লেট উদ্ধার করে তা পরীক্ষা করা হয়। সেখানে দেখা গেছে, সেনা সদস্যরা আসাম থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে তাতে নকল নাম্বার প্লেট লাগিয়ে সেখানে অভিযানে গিয়েছিলেন। তাদের এ কর্মকাণ্ডের কারণ এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ।

এদিকে, সেনা সদস্যদের সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত ক্ষমতা দেয়ার পর এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। জেলার কোথাও সামরিক বাহিনীকে এই ক’দিন টহল দিতেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। যেহেতু আসাম রাইফেলস স্থানীয় মানুষকে নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে, তাই অবিলম্বে ওই অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে ২৭ নম্বর আসাম রাইফেলসকে। তুলে নিতে হবে তাদের ঘাঁটি। স্থানীয় মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতি বছর ৪ ও ৫ ডিসেম্বর নাগাল্যান্ডে কালো দিবস পালন হবে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় খনিশ্রমিকদের বহনকারী পিকআপ ট্রাকে গুলি চালায় সেনা সদস্যরা। তাদের দাবি, সেখানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আছে বলে তাদের কাছে খবর ছিল। এতে নিহত হন আটজন। এ ঘটনার প্রতিবাদে নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করলে ফের গুলি চালানো হয় স্থানীয়দের ওপর। এতে নিহত হন পাঁচজন। রোববার ফের বিক্ষোভ শুরু হলে আত্মরক্ষার কথা বলে গুলি চালানো হয়। এতে আরেকজন নিহত হন। এ নিয়ে গোটা ভারতে এখন অসন্তোষ চরমে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply