রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র কীভাবে ঢুকলো

|

রিয়াজ রায়হান:

এক বছরে অন্তত দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে। কীভাবে এসব অস্ত্র ক্যাম্পে এলো তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী। রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বলছে, আরসাসহ কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ক্যাম্পগুলোতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মাদকসহ নানা অপকর্ম চালাতেই ব্যবহার করছে এসব অস্ত্র।

কুতুপালংয়ের নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহচর এক যুবকের দাবি, বছরখানেক আগে তাকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় আরসার সদস্যরা। কাঙ্ক্ষিত চাঁদা না পেয়ে দুই পা থেঁতলে দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম করা হয় তার।

কক্সবাজারের উখিয়াসহ বিভিন্ন থানায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বারো শতাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে আটকও করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার জনকে। যার অন্তত এক তৃতীয়ংশই অবৈধ অস্ত্র সংক্রান্ত।

পড়ুন : যে কারণে খুন করা হয়েছে মুহিবুল্লাহকে

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর এক অভিযানে কুতুপালং ক্যাম্প লাগোয়া একটি অস্ত্রের কারখানার সন্ধান পায় র‍্যাব। বিপুল পরিমাণ গুলিসহ ১০টি দেশীয় বন্দুক উদ্ধার ও তিনজন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু র‍্যাবই উদ্ধার করেছে দেশি-বিদেশি ৪৬টি আগ্নেয়াস্ত্র। এসময়ে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারাও গেছে সাতজন।

প্রশ্ন হচ্ছে, সংরক্ষিত একটি এলাকায় কীভাবে আসলো এসব অস্ত্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত দুইভাবে ঢোকে এসব অস্ত্র। মিয়ানমারের অংশে উখিয়া-টেকনাফের সীমান্ত ঘেঁষা কয়েকটি এলাকা থেকে রাতের বেলায় আনা হয় এসব অস্ত্র। আর এজন্য ক্যাম্পগুলোর কয়েকটি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া কেটে রেখেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া, স্থানীয় কয়েকটি গ্রুপ মাদক ও অর্থের বিনিময়ে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র এসব বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসীদের সরবরাহ করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানালেন র‍্যাব ১৫ অধিনায়ক লে.কর্নেল খায়রুল ইসলাম।

পড়ুন : রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ খুনের রহস্য

তবে ক্যাম্পের ভেতরের অস্ত্র নিয়ে দ্বিমত আছে ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন কর্মকর্তাদের। ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক নাইমুল হক বললেন, মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ পর্যায়ের কোনো বিদেশি অস্ত্র তারা পাননি। তারা সবসময় ওই এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন বলেও জানালেন তিনি।

স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বিষয়েও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply