ঋণের কিস্তি শোধের জন্য ঢাকা ফেরত গার্মেন্টসকর্মীকে হত্যা

হিলি প্রতিনিধি
ঈদ শেষে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরার পথে হত্যার শিকার নারী পোশাক শ্রমিক শারমীন আক্তার (২২) এর খুনি রিক্সা চালক শ্রী রাজু উড়াও (৩০) কে আলামতসহ আটক করেছে হাকিমপুর থানার পুলিশ। রাজু হাকিমপুর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের বাবু উড়াও এর ছেলে। আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৩ টায় তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।

হাকিমপুর থানায় মামলা সূত্রে জানাযায়, পোশাক শ্রমিক শারমিন আক্তার ঢাকার গাবতলীতে বসবাস করতো। গত জুলাই মাসে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক তাকে এক মাসের বিশ্রামের পরামর্শ দেন। পরে বাবার অনুরোধে শারমিন গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে এসআই পরিবহনে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের হাকিমপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। শুক্রবার ভোর রাত ৩টা ৪৪ মিনিটে সে হিলিতে পৌঁছায়। রিক্সা চালক রাজু উড়াও এর রিক্সায় করে বাড়ি ফেরার পথে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

পরে স্থাানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ৯ টায় উপজেলার চন্ডিপুর এলাকার বৈগ্রাম সড়কের ব্রীজের নিচে কাঁদার মধ্যে পুঁতে রাখা অবস্থায় শারমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ সুরতহালে শারমিনকে গলায় ফাঁস (শ্বাসরোধ) দিয়ে হত্যার আলামত পাওয়া যায়।

এঘটনায় শারমিনের বাবা শাফি আকন্দ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হাকিমপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) রেজাউল করিম রেজা জানায়, সিসি টিভির ফুটেজ ধরে হত্যাকারীকে সনাক্ত করা হয়। পরে হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার আখিউল আলম এবং ওসি আনোয়ার হোসেনের নেতেৃত্বে চন্ডিপুর এলাকায় রিকসা চালক শ্রী রাজু উড়াও এর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় তার বাড়ির শয়ন ঘরের খাটের নিজ থেকে নিহত শারমিনের কাপড়ের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

রাজু উড়াও জানায়, গ্রামীন ব্যাংক থেকে সে ৩০ হাজার টাকা কিস্তিতে লোন নেয়। সেই লোনের কিস্তির ৮শ৫০ টাকা পরিশোধ করার জন্য সে শারমীনকে হত্যা করে। শারমিন একা থাকায় এবং তার ব্যাগে টাকা আছে ভেবে সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। রাজু আরও জানায়, প্রথমে শারমিনকে বিকল্প রাস্তা হাসপাতাল রোড দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে সিসি ক্যামেরায় সে ধরা না পরে। নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে শারমিনের গলায় ফাঁস দেওয়া হয় এবং জমির কাদায় ঠেসে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ব্রীজের নিচে ফেলে রাখা হয়।