বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ

|

বন্যার পানিতে বাড়িঘর ডুবে গিয়ে আশ্রয়হীন হয়েছেন বিশটি জেলার অন্তত ৩৩ লাখ মানুষ। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি ভয়বাহ আকার ধারণ করেছে। সড়ক, মহাসড়ক ও রেললাইন ডুবে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি জেলার অভ্যন্তরীন ও আন্তজেলা যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে লালমনিরহাট ও দিনাজপুরের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কুড়িগ্রাম, জামালপুরে আন্তজেলা সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।

এছাড়া রংপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী, নওগাঁসহ অন্যান্য বন্যা উপদ্রুত জেলায় অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ মারাত্মত বিঘ্নিত। এতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ পৌঁছানো এবং নিরাপদ আশ্রয়ে মানুষ ও গবাদি পশুকে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।

লালমনিরহাট:

বন্যার পানিতে লাইন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লালমনিরহাটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বুড়িমারী-লালমনিরহাট রেল লাইনের তিনটি স্থান ভেঙে গত রোববার সকাল থেকে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই রুটের সব ট্রেনের শিডিউল অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল মোত্তালেব।

দিনাজপুর:

পুনর্ভবা নদীর পানি আর না বাড়লেও বাঁধ ভেঙে শহরের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত সোমবার বেলা ১০টার পর সারাদেশের সঙ্গে জেলার সড়ক ও দুপুর থেকে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. রফিক সাংবাদিকদের বলেন, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সকল রুটে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের সুপার গোলাম মোস্তফা বলেন, দিনাজপুর-পার্বতীপুর রেল পথের মনম্মদপুরসহ কয়েকটি স্থানে রেললাইন পানিতে ডুবে যাওয়ায় গত রোববার দুপুর থেকে রেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী-ফুলবাড়ী মহাসড়কে ধরলা নদীর স্রোতে চার স্থানে সড়ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই তিন উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের ওপর থেকে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সড়কে স্বল্প পরিসরে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।

অপর দিকে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী মহাসড়কের পাটেশ্বরী, মধ্যকুমরপুর ও নাগেশ্বরী পেট্রলপাম্পসহ চার স্থানে মহাসড়কের ওপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় ও ভেঙে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে।

জামালপুর:

বন্যার পানি ওঠায় জামালপুর-তারাকান্দি রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে দুই দিন ধরে। জামালপুর জংশন রেলস্টেশনের সহকারী মাস্টার দেলোয়ার হোসেন জানান, জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া কালিবাড়ি এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। লাইনের নিচে থেকে মাটি সরে গেছে কয়েক জায়গায়।

এ কারণে বুধবার সকাল থেকে জামালপুর-তারাকান্দি লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ লাইনে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকবে বলে জানান দেলোয়ার হোসেন।

তবে ঢাকার সঙ্গে জামালপুরের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে। জামালপুর-তারাকান্দি লাইনে জামালপুর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করে।

/কিউএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply