দখল-দূষণে মুগদাপাড়া খাল

|

নজরদারি না থাকায় নগরীর মুগদাপাড়ার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটি অবৈধ দখল-দূষণের কবলে পড়েছে। খালের পচা কালচে দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে চার দিকে ছড়িয়ে পড়ছে নানা পানিবাহিত রোগবালাই। পাশাপাশি মশার উপদ্রব বাড়ছে। খালের ময়লা-আবর্জনার কারণে পানি প্রবাহও কমে গেছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডটি উত্তর ও দক্ষিণ মুগদাপাড়া এলাকা নিয়ে গঠিত। মূলত খালটি এ ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে।

জানা যায়, দেবদোলাই খালের মাধ্যমে মুগদাপাড়ার সঙ্গে বিভক্ত হয়েছে ডিএসসিসি নবসম্পৃক্ত ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ড। ওই খালের উত্তর-পূর্ব পাশে ৭২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব পাশে রয়েছে ৭১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা। এ দুই ওয়ার্ড আগে মাণ্ডা নামে পরিচিত ছিল।

আর এ দুই ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই নির্বিচারে মুগদাপাড়া খালে ময়লা ফেলছে বলে ডিএসসিসি ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অভিযোগ করেছেন। এছাড়া খালের জায়গা দখল করে বাড়িঘর নির্মাণসহ অবৈধ দখল যজ্ঞেও মেতেছেন মাণ্ডার বাসিন্দারা। ওয়াসার সাইনবোর্ডে নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাসিন্দারা নির্বিচারে ওই খালটিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন।

অভিযোগ রয়েছে, খালের দু’পাড়ের বাসিন্দারাই সাধারণত ময়লা ফেলছেন। এ বিষয়ে বাসিন্দাদের সাবধান করা হলেও তারা মানছেন না।

মুগদাপাড়া এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় অধিবাসীরা পলিথিনে করে গৃহস্থালির আবর্জনা সরাসরি খালে ফেলছেন। আবর্জনায় ভরাট হয়ে মুগদাপাড়ার খালটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এখানে বাসিন্দাদের নোংরা পরিবেশেই বসবাস করতে হয়। চার দিকে নানা রোগবালাই ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অধিবাসীদের অভিমত, কর্তৃপক্ষ যদি খালগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখে তাহলে পানির প্রবাহে কোনো বাধা থাকবে না।

মুগদাপাড়া খালের ওপর বিভিন্ন স্থাপনাও নির্মাণ করা হয়েছে। খালের দুই পাড় দখল করে অনেকে রিকশা গ্যারেজ নির্মাণ করেছেন। অনেকে ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন।

আর বাসিন্দারা নিচু এলাকায় খালের মধ্যে এমনভাবে নির্বিচারে ময়লা ফেলছেন যে, এখন আর খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।

পাশাপাশি খালের অপর পাড়ে রাস্তায় যেতে বাড়ির সঙ্গে সংযোগ রেখে নির্মাণ করা হয়েছে লোহা, বাঁশ ও ঢালাই করা অনেক সেতু। এসব সেতু একেবারেই অনুমোদনহীন, যা উচ্ছেদের নির্দেশ রয়েছে।

মুগদাপাড়ার ঝিলপাড়ের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

এ এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের দু’পাড়ের বাসিন্দারা নির্বিচারে আবর্জনা ফেলে খাল ভরাট করছেন। তাছাড়া ঢাকা শহরের ময়লা পানি নিষ্কাশন হয় এ খালে। যে কারণে এ খালের ময়লা আবর্জনায় প্রচুর মশার জন্ম হয়।

ডিএসসিসির ৭১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. খাইরুজ্জামান বলেন, যেহেতু খালের সঙ্গে বিভক্ত রয়েছে মুগদাপাড়া ও মাণ্ডা এলাকা। সেহেতু খালের দু’পাড়ের বাসিন্দারা আবর্জনা ফেলে। এমনকি অবৈধ দখলযজ্ঞও রয়েছে খালে।

আমরা কাউন্সিলররাও চাই দখলযজ্ঞসহ খালের দখল-দূষণ বন্ধ হোক। কিছু অসাধুই এসব কাজ করছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে বারবার সমাধান চাওয়া হচ্ছে।

ডিএসসিসি ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মূলত মাণ্ডা এলাকার বাড়িওয়ালারাই খালে দখলযজ্ঞ চালাচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় তারা খালের জায়গা দখল করে বাড়িঘর ও অসংখ্য সেতু নির্মাণ করেছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়া সত্ত্বেও কিভাবে যেন বাড়িওয়ালারা

তাদের ম্যানেজ করে ফেলে। এ বিষয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সমাধান দিতে হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply