চার হাসপাতাল ঘুরেও বাঁচানো গেল না মঞ্জুরকে

|

খুলনা ব্যুরো :

চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু। কতটা বেদনাদায়ক, তা কেবল ভুক্তভোগী বাবাই জানেন। কে সান্ত্বনা দেবে তাকে? না, দেয়ার কেউ নেই। খুলনায় এমনই এক অসহায় বাবা’র আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। মৃত মঞ্জুরের বয়স ১৬ বছর, বাড়ি খুলনার রূপসায়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয় মঞ্জুর শেখ। প্রথমে তাকে নেয়া হয় স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পাঠানো হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু অজানা কারণে হাসপাতালে চিকিৎসারত মঞ্জুরকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

অসহায় বাবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। সন্তানকে কোথায় ভর্তি করাবেন, পরামর্শ চান আশপাশের লোকজনের কাছে। একজনের কথা অনুযায়ী নগরীর সিটি মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয় মঞ্জুরকে। তারাও অনীহা প্রকাশ করে ভর্তি করতে। ততক্ষণে প্রচণ্ড জ্বরাক্রান্ত মঞ্জুর হয়ে পড়ে অনেকটাই নিস্তেজ। শেষ পর্যন্ত তার ঠাঁই হয় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ভোরে সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে।

মঞ্জুরের বাবা বাবুল শেখ জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘অন্যত্র’ নেয়ার কথা বলেই দায় সেরেছে। কোথায় নিলে ভাল চিকিৎসা পাব, সে বিষয়ে কোনো পরামর্শই দেয়নি। পরে একজন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কথা মতো একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। বাবুল বলেন, চার-চারটি হাসপাতাল ঘুরলাম, কিন্তু কেউ আমার বুকের মানিককে বাঁচাতে পারলো না।

শেষে যেখানে নেয়া হয়েছিল মঞ্জুরকে, সেই গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আনন্দ মোহন সাহা বলেন, খুবই গুরুতর অবস্থায় রোগীকে আনা হয়। তার পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। শক সিনড্রোমে মঞ্জুরের মৃত্যু হয় বলেও জানান চিকিৎসক।

এদিকে, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রাজ্জাক ডেঙ্গু রোগী ভর্তিতে অনীহা প্রকাশ করায় ক্ষোভ জানান। বলেন, সরকারি-বেসরকারি যে হাসপাতালই রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে কর্তব্যে অবহেলা করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ব্যবস্থা না হয় নেয়াই হলো, মঞ্জুর তো বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসবে না।

যমুনা অনলাইন: এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply