২ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ; নিহত ৮, আহত ২১

|

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

ডিপজল পরিবহন ও নিশাত পরিবহন নামে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮ যাত্রী নিহত ও আরও ২১ যাত্রী আহত হয়েছেন।

শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ঠাকুরগাঁও-ঢাকা
মহাসড়কের বড়খোঁচাবাড়ি এলাকার বলাকা উদ্যানের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন এবং বাকি ১৯
জনের মধ্যে ১১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে
রেফার্ড করা হয়েছে। বাকি আটজন চিকিৎসা নিচ্ছেন সদর হাসপাতালে।

ঘটনার পর সড়কে প্রায় একঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পুলিশ ও ফায়ার
সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রম শেষ করার পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম , সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার
আব্দুল্লাহ আল মামুন, সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান সহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন
কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে
নিহতদের পরিবারকে দশ হাজার টাকা ও আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন, ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কালমেঘ জিয়াবাড়ি এলাকার মোস্তফা কামাল (৪০) ও তার স্ত্রী মনসুরা বেগম (৩৬), একই উপজেলার সনগাঁও এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুর রহিম (৩৯), লাহিড়ি বাজার এলাকার অনিল সাহার স্ত্রী স্বরশ্বতী সাহা (৩৫), একই এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র (৪২), দিনাজপুরের কাহারোল রসুলপুর গ্রামের গলিয়া রায়ের স্ত্রী মঙ্গলি রাণী (৬৬) ও মনেশ্বর রায়ের স্ত্রী জবা রাণী (২৬) এবং সদর উপজেলা
পল্লীবিদ্যুৎ লক্ষিপুর গ্রামের শেখ ইসা মুহাম্মদের ছেলে আব্দুল মজিদ।

সুরেশ চন্দ্র নামে বাসের এক আহত যাত্রী জানান, তিনি দিনাজপুরের দশ মাইল থেকে ডিপজল গাড়িতে চড়ে ঠাকুরগাঁওয়ে আসছিলেন। রাস্তা ফাঁকা থাকায় চালক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন এসময় বড়খোঁচাবাড়ি এলাকায় গাড়িটি পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে নিশাত পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গাড়িটি কিছুটা গতি কমিয়ে চালালে এমন দুর্ঘটনা ঘটতোনা।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পাওয়ার পরপরই ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহত ও আহত ব্যাক্তিদের বাসের ভিতর থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর ডিপজল ও নিশাত পরিবহনের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক রফিকুজ্জামান জানান, সকালে
ঠাকুরগাঁও থেকে নিশাত নামক বাসটি দিনাজপুরের দিকে যাচ্ছিল। এসময় অপরদিক থেকে ডিপজল পরিবহনের বাসটি ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দ্যেশে আসার সময় সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি নামক স্থানে বাস দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনা স্থলেই নিহত হয় ৫জন ও আহত হয় ২৪জন। আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনা হলে সেখানে আরো দুইজন নিহত হয়। অন্য আহতদের মধ্যে ১১জনের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। রংপুরে যাওয়ার পথে আরো একজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ৮জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: প্রভাষ কুমার দাশ জানান, বর্তমানে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে বর্তমানে আহতদের ৮ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, দ্রুতই তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে রেফার্ড করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম এ ঘটনায়
দু:খ প্রকাশ করে জানান, চালকদের অসতর্কতার কারণে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক
ভাবে দশ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছে জেলা প্রশাসন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply