মাকে ধর্ষণ করে হত্যা, বাবা-দাদার ফাঁসি চান মেয়ে

|

দাদা মুনছের আলীর হুকুমে বাবা মমিনুল হক তার সহযোগী হাফিজুলকে সঙ্গে নিয়ে আমার মা লতিফা হেলেন মঞ্জুকে নির্মমভাবে খুন করেছে। আমি ওই সব খুনিদের ফাঁসি চাই। রোববার দুপুরে উপজেলার বৃ-কাশো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে শিক্ষক লতিফা হেলেন মঞ্জুর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে নিহতের মেয়ে মিতু এ সব কথা বলেন।

মিতু শিক্ষক লতিফা হেলেন ও তার সাবেক স্বামী মমিনুলের একমাত্র কন্যা।

নাটোরের গুরুদাসপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল শিক্ষিকা লতিফা হেলেন মঞ্জু (৩২) হত্যায় তার সাবেক স্বামী মমিনুল হককে দায়ী করেছেন নিহতের মা মনোয়ারা বেগমও।

মমিনুল গ্রেফতার হলেও তার বাবা মুনছের আলী গ্রেফতার না হওয়ায় মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের মেয়ে লতিফা হেলেনকে একই গ্রামের মুনছের প্রামাণিকের ছেলে মমিনুল ১৯৯৬ সালে প্রেম করে বিয়ে করে। ছেলের বউ ঘরে নিলেও মেনে নেয়নি বাবা মুনছের। হেলেনের গর্ভে মিতু নামের এক কন্যার জন্ম হয়।

শ্বশুর শাশুড়ির অত্যাচার এবং স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় লতিফা ২০০৩ সালে মমিনুলকে ডিভোর্স দিয়ে মায়ের কাছে ফিরে আসেন মঞ্জু। শুরু করেন জীবনের নতুন অধ্যায়। এসএসসি থেকে এমএ পাস করেন।

২০১০ সালে বৃ-কাশো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকরি পান। চাকরি পাওয়ার পর লতিফার বিয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু করে।কিন্তু তার সাবেক স্বামী মমিনুল কারো সঙ্গে বিয়ে হতে দেয়নি।

মমিনুল ও তার বাবা মুনছের এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ বিয়ে করতে সাহস পায়নি। মমিনুল লতিফাকে ফিরে পাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়।

একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বৃষ্টির সময় মঞ্জুকে একা পেয়ে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ধর্ষণ শেষে খুন করে। তবে পুলিশ এ ধরনের অভিযোগ পেলেও তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ওই স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল মাজেদ, প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সরোয়ার্দী হোসেন ও সম্পাদক নজরুল ইসলাম মৃধা, সাংবাদিক এমএম আলী আক্কাছ, শিক্ষক আতিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু প্রমুখ। নিহতের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে হত্যামামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মা মনোয়ারা বেগম পাশেই ভাইয়ের বাড়িতে গেলে বৃষ্টিতে আটকে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন শয়ন ঘরের বারান্দায় রক্ত। খোঁজাখুঁজির পরে লতিফার লাশ পার্শ্ববর্তী গোলাম মওলার পুকুর থেকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর থানার ওসি মো.মোজাহারুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে নিহতের সাবেক স্বামী মমিনুল ইসলামকে গ্রেফতার করে নাটোর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply