এবার নারায়ণগঞ্জে ১২ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আটক

|

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকায় একটি মাদ্রাসায় একাধিক শিশুকে ধর্ষণ ও যৌন হায়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে আটক করেছে র‌্যাব। বৃহস্প্রতিবার সকাল দশটায় র‌্যাব মাহমুদপুর বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আল-আামিনকে আটক করে। এসময় শিক্ষক আল-আমিন ১২ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হেনস্তার কথা স্বীকার করে নিজের মৃত্যুদণ্ড শাস্তি হওয়া উচিত বলে দাবি করেন।

এদিকে আটক শিক্ষক আল-আমিনের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে স্থানীয়রা। এর আগে, ২৭ জুন অক্সফোড হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

জানা যায়, ২০১৫ সালে ফতুল্লা থানার ভুইঘর মাহমুদপুর পাকা রাস্তা এলাকার বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন শিক্ষক আল আমিন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্কুলে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে শিশু শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে ব্ল্যাকমেইল করে, আবার কোন শিক্ষার্থীর ছবি নিয়ে পন্যগ্রাফি নায়িকার মাথা কেটে শিক্ষার্থীর মাথা বসিয়ে দিয়ে তা ইন্টানেটে ছড়িয়ে দেয়া হবে বা বাবা- মাকে দেখিয়ে দিবে এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চশ শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্তা করে আসছিলো এই শিক্ষক।

র‌্যাব জানায়, গত ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া অক্সফোড হাই স্কুলের শিক্ষক আরিফুর ইসলাম ২০- ২৫ জন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়। ওই ঘটনার গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ র‌্যাবের একজনর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলপ উদ্দিনের ফেসবুক পেইজে আপলোড করে। মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী মা শিক্ষার্থীর পাশে শুয়ে ফেসকুকে ওই নিউজ দেখছিলো। তখন পাশে শুয়ে থাকা ওই ছাত্রী তার মাকে বলে , মা অক্সফোর্ড স্কুলের শিক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন । কিন্তু আমাদের মাদ্রসার হুজুর কেন গ্রেফতার করা হয়না। ওই শিক্ষার্থী তার মাকে জানায়, হুজুর অনেক মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন। একাধিক শিক্ষার্থীকে বছরের পর বছর যৌন হয়রানি করে আসছে। পরে বিষয়টি ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মা র‌্যাবকে জানায়।

পরে র‌্যাব অনুসন্ধান নেমে জানতে পারে, ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত মাদ্রসার প্রধান শিক্ষক ১০ থেকে ১২ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে শিক্ষক আল-আমিনকে গ্রেফতার করে। আটক আল-আলামিন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ভুইয়াপাড় এলাকায় বাড়ি।

র‌্যাবের সিও কাজী শামসের উদ্দিন চৌধুরি জানান, এখন পর্যন্ত শিক্ষক আল-আমিন দ্বারা নির্যাতনের শিকার ১২ জন ভিকটিমের খোঁজ পাওয়া গেছে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, আটক শিক্ষক আল আমিনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে এবং নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক চাইলে ফতুল্লা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করতে পারবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply