শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে গুলি: বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর

|

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীতে বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে গুলিবর্ষণের মামলার শুনানি শেষে বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন বাতিল করেছেন আদালত। রোববার পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এ উপস্থিত বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীসহ এই মামলার সকল আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলী।

চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু এবং অন্যতম আসামি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলীর উপস্থিতিতে সোমবার সকাল ১০টায় এই মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হবে। যুক্তিতর্ক শেষ হলে রায় ঘোষণা করা হবে।

জানা গেছে, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে তাকে বহনকারী ট্রেনবহর যাত্রাবিরতি করলে অতর্কিত ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশ বাদি হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি পুনঃতদন্ত করে পুলিশ। তদন্ত শেষে নতুন ভাবে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করার বছরে এই মামলায় পুলিশ কোন স্বাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্টও দাখিল করে। কিন্তু আদালত সে রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

প্রথম চার্জশিটের ৭ আসামির বাইরে এ মামলায় যাদের নতুনভাবে আসামি করা হয় তারা হলেন- ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শামসুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক কে.এম.আক্তারুজ্জামান আক্তার, পাকশীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাহাপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, রেজাউল করিম শাহীন, আজিজুর রহমান শাহীন, সেলিম আহমেদ, পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, বিএনপি নেতা ইসলাম হোসেন জুয়েল, শহীদুল ইসলাম অটল, আব্দুল জব্বার প্রমুখ। আসামিদের মধ্যে গত ২৫ বছরে ওসিয়া, আলী আজগর, খোকন, তুহিন ও আলমগীরসহ ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সোমবার থেকে শুরু হওয়া যুক্তিতর্ক শেষে যে কোন দিন এ মামলার রায় ঘোষণা। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ছিলেন পিপি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা এবং আসামি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম গ্যাদাসহ কয়েকজন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply