মসজিদে যেতে স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো বানালেন মুসল্লিরা!

|

কামাল হোসাইন,নেত্রকোণা

যাতায়াতের দীর্ঘ দুর্ভোগের পর নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলায় মসজিদে যেতে গ্রামের মুসল্লিরাই এবার সাঁকো বানিয়েছেন। এখন মসজিদে নামাজ আদায় করতে যেতে আর কাউকে কাদা ও পানিতে নামতে হবে না।

কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের মাছিম কাকৈড়া গ্রামের এ মসজিদে অন্তত পঞ্চাশটি পরিবার নামাজ আদায় করেন। শুক্রবার গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল হাই মন্ডল, মমতাজ আকন্দ ও আব্দুল বারেকসহ সকল মুসল্লিরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তারা বলেন, সময়ের সাথে কত জনপ্রতিনিধি বদল হলো কিন্তু কেউ এই গ্রামের মসজিদ ও মুসল্লিদের দুর্ভোগের দিকে নজর দেননি! উপায়ন্তর না পেয়ে শেষপর্যন্ত গ্রামবাসী মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে, বাঁশ এনে সাঁকো তৈরি করছি। অর্ধশত বছর হয়ে গেছে তারপরও কোনো জনপ্রতিনিধি সুনজর দেননি মসজিদটির দিকে।

দিনের পর দিন সড়কে বসে পথচারী বা পরিবহনের যাত্রীদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে মসজিদটি বর্তমানে কিছু অংশ হাফ বিল্ডিং করা হয়েছে। চলমান রয়েছে নির্মাণ কাজ। অর্থনৈতিক সাপোর্ট না থাকায় মসজিদের এখনো সত্তর ভাগ কাজও সম্পন্ন করা যায়নি।

এদিকে সাঁকোও যখন ছিলো না মসজিদে যেতে কাদা ও পানিতে শরীর মাখামাখি করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে অসুস্থ বা বয়সের কারণে যারা শারীরিকভাবে দুর্বল তারা মসজিদে আসতেই পারতো না।

আব্দুল সলিম মন্ডল, মমতাজ আকন্দ জানান, পনের দিন ধরে গ্রামবাসী যার যখন যেভাবে সময় হচ্ছে সাঁকো বানানোর কাজ করছেন তারা। সাঁকো নির্মাণ শেষ হতে আরো কয়েকদিন লাগতে পারে।

মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. নুরুদ্দিন বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবশ্যই ঈমানের অঙ্গ। প্রত্যেকেই আমরা সবসময় পরিষ্কার থাকতে চাই। আর মসজিদে নামাজে যাওয়ার আগে তো পরিচ্ছন্নতা আরও বেশি রক্ষা করা হয়।

মসজিদে যেতে গিয়ে যদি কাউকে কাদায় মাখামাখি হতে হয় তবে সেই ব্যক্তির মনের অবস্থাটা কি হয় তা প্রত্যেক মুসল্লিদেরই জানা। এমন মন্তব্য করে ইমাম নুরুদ্দিন বলেন, যেহেতু এটা ধর্ম সম্প্রীতির দেশ সেক্ষেত্রে ধর্মীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনার পাশাপাশি ভালোমন্দের প্রশ্নে প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি মসজিদের দিকেও সুদৃষ্টি রাখতে হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply