ওরাও ছিলেন ক্রিকেটার!

|

বর্তমানে শোবিজে ব্যস্ত সময় কাটালেও অনেক তারকা আছেন যারা একটা সময় ক্রিকেটপ্রেমী ছিলেন। কেউ কেউ আছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়েও খেলেছেন। কিন্তু শেষতক ক্রিকেট খেলায় নিয়মিত হননি। এমন কয়েকজন শোবিজ তারকা নিয়েই এ প্রতিবেদন।

বর্তমান ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত এবং সন্তুষ্ট থাকলেও একটা সময় ক্রিকেট খেলায় পটু ছিলেন কেউ কেউ। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ক্রিকেট খেলায় নিয়মিত হতে পারেননি। এমনই এক তারকার নাম আদিল হোসেন নোবেল। তিনি চট্টগ্রামের স্থানীয় ক্লাবের হয়ে অনেকগুলো ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ জাতীয় দলে ক্রিকেট খেলবেন। কিন্তু তার এ স্বপ্নের কথা পরিবারকে কখনও বলতে পারেননি। কেননা তার পরিবার চেয়েছিল তিনি যেন একটি অভিজাত কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হন। পরিবারের এ ইচ্ছে পূরণ করেছেনও। কিন্তু নিজের ইচ্ছেটা পূরণ করা হয়নি তার। জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলতে না পারার কষ্টটা সব সময় তাকে ভাবিয়ে রাখে। এ প্রসঙ্গে নোবেল বলেন, ‘ছোটবেলায় তো মনে মনে অনেক কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখে মানুষ। শেষ অবদি একটি স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। আমার ক্ষেত্রে ঠিক তাই হয়েছে। পরিবারের স্বপ্ন ছিল একটি অভিজাত অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ার। আমি সেটাই হয়েছি। ভালো ক্রিকেট খেলতে পারতাম এবং জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলার স্বপ্নও ছিল। কিন্তু একটি স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে তাই অন্যদিকে মনোনিবেশ করিনি।’

ক্রিকেটে কেউ কেউ আছেন খুব ভালো করেছেন। কুড়িয়েছেন জনপ্রিয়তাও। কিন্তু হঠাৎ করে অন্য পেশায় ব্যস্ত হওয়ার ফলে আর নিয়মিত হতে পারেননি ক্রিকেট খেলায়। বাংলা গানের যুবরাজ খ্যাত আসিফ আকবর এমন একজন, যিনি নব্বই দশকের শেষের দিকে ক্রিকেট নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দলের হয়ে তিনি কয়েকটি ম্যাচও খেলেছেন। ক্রিকেটে নিয়মিত হওয়ার আগেই সঙ্গীত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারপর ক্রিকেটে আর নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পাননি। তবে বর্তমানে ক্রিকেট নিয়ে টেলিভিশন টকশো কিংবা বিপিএলও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায়। ক্রিকেটে কেন নিয়মিত হলেন না, জানতে চাইলে আসিফ আকবর বলেন, ‘ক্রিকেট খেলা কেন ছেড়েছি এটা ঠিক বলা কঠিন। এখন ক্রিকেট না খেললেও খেলার অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আমি জড়িত। গানে নিয়মিত হব এটা কখনও ভাবিনি। তবে এটা সত্যি, গানে নিয়মিত না হলে হয়তো ক্রিকেটারই থাকতাম। এখন খেলার মাঠে না হলে ক্রিকেট সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে আমি ঠিকই আছি। সেটি টকশো বা গানেই হোক।’

জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলতে পারার সুযোগ পাওয়া সহজ কথা নয়। কারও কারও কাছে এ সুযোগ ধরা দিলেও সেটাকে ছুটি দিয়েছেন। এমনই এক তারকা জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলসের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে কয়েকটি ম্যাচও খেলেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটে নিয়মিত হবেন। কিন্তু গানের নিয়মিত হয়ে পড়ার কারণে ক্রিকেটে তাকে আর দেখা যায়নি। ক্রিকেট থেকে কেন নিজেকে সরিয়ে নিলেন জানতে চাইলে হামিন আহমেদ বলেন, ‘একদশক ধরে ক্রিকেট খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে দুই বছর খেলেছি। ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ড সফর ছিল জাতীয় ক্রিকেটে আমার শেষ সফর। ১৯৮৮ সালে নিজের ইচ্ছায় ক্রিকেট থেকে বিদায় নেই। গান ও নিজের অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে এখনও মনে-প্রাণে ক্রিকেট খেলা ভালোবাসি এবং খেলা দেখি।’

কেউ কেউ আছেন শখের বশে ক্রিকেট খেলতেন। বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ক্রিকেট খেলতে খেলতে অনেক সময় সবার দৃষ্টি কাড়েন। এমন একজন সঙ্গীতশিল্পী এসডি রুবেল। ছোটবেলা থেকে ক্রিকেট ভক্ত ছিলেন। চাঁদপুর ক্রিকেট লীগের পক্ষে কয়েকটি ম্যাচ খেলেন তিনি এবং একবার চাঁদপুরের বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবেও নির্বাচিত হন। তিনিও সঙ্গীতে ব্যস্ত হওয়ার ফলে ক্রিকেট খেলায় নিয়মিত হতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে এসডি রুবেল বলেন, ‘ছোটবেলায় তো খেলাধুলায় মন থাকে সবার। আমিও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারতাম। তবে গানের প্রতিও আমার ঝোঁক ছিল বেশি। তাই ক্রিকেট ভালো খেলতে পারলেও সেদিকে বেশি মনোযোগী হইনি। ক্রিকেটে নিয়মিত হওয়া আমার ইচ্ছেও ছিল না। গান নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে এখনও ক্রিকেট খেলতে ভালো লাগে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচগুলোও দেখি নিয়মিত।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply