পাকিস্তানকে উড়িয়ে আফগানদের জয়

|

দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষেই হেরে গেলো পাকিস্তান। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলটি পাত্তাই পায়নি আফগানদের সামনে।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। এই জয়ে বিশ্বকাপে চমক দেখানোর রসদ পেলো রশিদ খান-মোহাম্মদ নবীরা।

শুক্রবার প্রথমে ব্যাট করে বাবর আজমের সেঞ্চুরির পরও ৪৭.৫ ওভারে ২৬২ রানে অলআউট পাকিস্তান। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। দলের জয়ে ৭৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন হাসমতউল্লাহ শহীদি।

দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেভাবে লড়াই করতে পারেনি পাকিস্তান। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। বাজে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও ভুগিয়েছে পাকিস্তানকে।

২৬৩ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে আফগানিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ও হযরতউল্লাহ জাজাই। উদ্বোধনীতে ৮০ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান।

তবে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাওয়া আফগানিস্তানের সেরা ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ৬.৩ ওভারে হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করেন। এরপর তার আর খেলা হয়নি। রিটায়ার্ডহার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে ২৩ রান করেন শেহজাদ।

তার বিদায়ের পর রহমত উল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাওয়া হযরতউল্লাহ ফিফটির পথেই ছিলেন। কিন্তু দুর্ভ্যাগ আফগান এই ওপেনারের। মাত্র এক রানের জন্য ফিফটি করতে পারেননি।

পাকিস্তানের লেগ স্পিনার শাদাব খানের গুগলিতে বিভ্রান্ত হওয়ার আগে মাত্র ২৮ বলে আটটি চার ও দুই ছক্কায় ৪৯ রান করে ফেরেন হযরতউল্লাহ।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৬২ রানে অলআউট হয়েছে পাকিস্তান। দুর্বল প্রতিপক্ষ আফগানদের বিপক্ষে পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বাধীন দলটি।

বাবর আজমের সেঞ্চুরির পরও ৪৭.৫ ওভারে ২৬২ রানে অলআউট পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১২ রান করেন বাবর আজম। এছাড়া ৪৪ রান করেন শোয়েব মালিক। ৩২ রান করেন ওপেনার ইমাম-উল- হক। আফগানিস্তানের হয়ে ১০ ওভারে মাত্র ৪৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ নবী। এছাড়া দুটি করে উইকেট শিকার করেন রশিদ খান ও দৌলত জাদরান।

শুক্রবার ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান।

এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনার পরও ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামে পাকিস্তানের। উদ্বোধনীতে ৪৭ রান করা পাকিস্তান এরপর ১৮ রানের ব্যবধানে হারায় প্রথম সারির ৩ ব্যাটসম্যানের উইকেট।

ইনজুরি কাটিয়ে খেলায় ফেরা ইমাম-উল-হক ৩৫ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৩২ রান করতেই হামিদ হাসানের বলে বোল্ড হন।

ইমামুলের বিদায়ের পর সুবিধা করতে পারেননি অন্য ওপেনার ফখর জামান। মোহাম্মদ নবীর অফ স্পিনে বোল্ড হয়ে ফেরেন পাকিস্তান সেরা এই ওপেনার। তার আগে ২৩ বলে ১৯ রান করার সুযোগ পান পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরি করা ফখর।

এরপর চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা হারিস সোহেল ফেরেন রানের খাতা খুলেই। মোহম্মদ নবীর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন পাকিস্তানের এই তারকা ক্রিকেটার।

১৮ রানের ব্যবধানে ইমাম-উল-হক, ফখর জামান ও হারিস সোহেল মতো সেরা তিন ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তনা। মজার ব্যাপার হলো তিন ব্যাটসম্যানই বোল্ড হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরেন।

৬৫ রানে ৩ উইকেট পতনের পর দলীয় ১০০ রানে ফেরেন মোহাম্মদ হাফিজ। এরপর দলের হাল ধরেন বাবর আজম ও শোয়েব মালিক।

পঞ্চম উইকেটে দায়িত্বশীল ব্যাটিং কর দলকে খেলায় ফেরান বাবর আজম ও শোয়েব মালিক। এই জুটিতে তারা ১০৩ রান যোগ করেন। হামিদ হাসানকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫১তম বলে ফিফটি পূর্ণ করেন বাবর।

ফিফটির পথেই ছিলেন শোয়েব মালিক। মোহাম্মদ নবীর কারণে ফিফটির দেখা পাননি। সাজঘরে ফেরার আগে ৫৯ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৪৪ রান করেন শোয়েব মালিক।

তার বিদায়ের পরও ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে যান বাবর আজম। অনবদ্য ব্যাটিং করে ৯৯তম বলে তিন অঙ্কের মাইলফলক স্পর্শ করেন পাকিস্তানের এ ওপেনার। সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি বাবর। সাজঘরে ফেরার আগে ১০৮ বলে ১০ চার ও দুই ছক্কায় ১১২ রান করেন বাবর আজম।

শেষ দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের কারণে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনশ রান করতে পারেনি পাকিস্তান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাকিস্তান: ৪৭.৫ ওভারে ২৬২/১০ (বাবর আজম ১১২, শোয়েব মালিক ৪৪, ইমাম-উল ৩২; মোহাম্মদ নবী ৩/৪৬, রশিদ খান ২/২৭, দৌলত জাদরান ২/৩৭)।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply