ট্রেনে কাটা পড়ে ভিক্ষুকের মৃত্যু, থলেতে মিলল ৮০ হাজার টাকা !!

|

পেশাদার ভিক্ষুক খোকা মোল্লা (৬৫) তার ভিক্ষার থলে (ব্যাগ) কখনও স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে দিতেন না। বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় দিনভর ভিক্ষা করে রাতে বাড়ি ফিরতেন।

ভিক্ষে করে পাওয়া টাকা-পয়সা ওই থলেতে রাখতেন। রাতে ঘুমানোর সময়ও থলেটি মাথার কাছে থাকতো। ওই থলে রক্ষা করতে গিয়েই ট্রেনে কেটে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হলো। থলেতে ভিক্ষার ৮০ হাজার ১৯০ টাকা পাওয়া গেছে।

বুধবার সকালে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর স্টেশনে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্বজনদের বরাত দিয়ে বগুড়া রেল স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই কায়কোবাদ জানান, গাবতলী উপজেলার নেপালতলি ইউনিয়নের ধনঞ্জয় গ্রামের মৃত মনি মোল্লার ছেলে খোকা মোল্লা দীর্ঘ ২৫ বছর ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে তার ভিক্ষার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।

তিনি জানান, ভিক্ষুক খোকা সবসময় একটি চটের থলে রাখতেন। সকালে কলেজ ট্রেনে বগুড়া শহরে এসে দিনভর ভিক্ষা করতেন। এরপর বিকালের ট্রেনে বাড়ি ফিরতেন। সারাদিন ভিক্ষার টাকা-পয়সা ওই থলেতে রাখতেন।

বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে তিনি সুখানপুকুর স্টেশনে বগুড়াগামী কলেজ ট্রেনের দুই বগির জয়েন্টে উঠে বসেন। এ সময় ভিক্ষার থলেটি তার কাঁধে ছিল। ট্রেন প্লাটফরম ছাড়ার সময় ঝাঁকুনিতে থলেটি নিচে পড়ে যায়। থলে উদ্ধারে খোকা মোল্লাও লাফ দেন। এতে ট্রেনের চাকায় কেটে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

এসআই কায়কোবাদ জানান, ভিক্ষুক খোকার ওই থলেতে ভিক্ষার ৮০ হাজার ১৯০ টাকা পাওয়া গেছে। এসব তার স্ত্রী ও সন্তানদের দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ গ্রামের গোরস্থানে দাফন করা হয়।

গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বাদল বলেন, থলেতে থাকা নোট ও মুদ্রা গণতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে।

সুখানপুকুর রেল স্টেশন মাস্টার আবদুল মতিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই টাকা তার পরিবারকে দেয়া হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply