এবার মিলার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ সাবেক স্বামীর

|

সম্প্রতি সাবেক স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অমানুষিক নির্যাতনে ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন কণ্ঠশিল্পী মিলা।

এবার তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করলেন সাবেক স্বামী বৈমানিক পারভেজ সানজারী।

শনিবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মিলার সঙ্গে তার দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার কারণ ব্যাখ্যা করে একটি স্ট্যাটাস দেন পারভেজ সানজারী।

তিনি লেখেন, ‘নীরব থাকব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। দেড় বছর ধরে নীরবই ছিলাম। এই নীরবতা একজন প্রাক্তন স্ত্রী ও তার পরিবারের প্রতি আমার শ্রদ্ধা প্রদর্শন।

কিন্তু এই নীরবতা যখন দুর্বলতা হিসেবে গণ্য হতে থাকে তখন চুপ থাকাটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আমি কখনোই চাইনি পারিবারিক বিষয়গুলো এভাবে প্রকাশ হোক।

আমার পরিবার, আমার শিক্ষা, পেশা, জ্ঞান ও মূল্যবোধ কখনোই আমাকে সেটা শেখায়নি। কিন্তু মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ বক্তব্য ফেসবুক ও ইউটিউবের মত সামাজিকমাধ্যমে অপপ্রচার এবং গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে আমার ও আমার পরিবারকে নিয়ে যখন বানোয়াট বক্তব্য তুলে ধরা হয় তখন মুখ বুজে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

অপ্রিয় সত্যগুলো অনিচ্ছা সত্ত্বেও এভাবে প্রকাশের জন্য আমি শুরুতেই ক্ষমাপ্রার্থী।

আমাদের বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ১২ মে। সংগীত তারকা মিলার সঙ্গে আমার পরিচয় তারও আগে। কিন্তু বিয়ের পরই তিনি পারিবারিক জীবন সম্পর্কে তার নিজস্ব অস্বাভাবিক ধারণাগুলো আমার ও আমার পরিবারের ওপর চাপিয়ে দিতে থাকে|

একটি যৌথ পরিবারে কখনোই ঘরের বউ তার কাজের বুয়া-দাড়োয়ানকে দিয়ে সিগারেট আনানো, অশালীন কাপড়ে মুরব্বি-মেহমানদের সামনে যাওয়া, তুচ্ছ কথায় বাড়িতে ভাংচুর করা ও প্রতিবেশীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলা……… মেনে নেয়া যায় না।

তার প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল আমার চিরায়ত মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি এক পর্যায়ে সীমা অতিক্রম করে ফেলে। তাকে বোঝানোর সব ধরনের চেষ্টা আমার ব্যর্থ হয়।

আমি ধারণা করেছিলাম সে নিজেকে শুধরে নেবে। কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। আমার বৃদ্ধ পিতামাতা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও তার আক্রমণের নিশানায় পরিণত হন।

বাসাবাড়িতে অশান্তি দেখা দেয়। সবকিছু মিলিয়ে পরিবেশ যখন সহ্যের বাইরে চলে যায় তখন উভয় পরিবারের কাছে আমি বিচ্ছেদের কথা জানাই।

কিন্তু বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের পরই পরিস্থিতি আর সংকটময় হয়ে পড়ে। তার দায়েরকৃত সম্পূর্ণ সাজানো ও বানোয়াট নারী নির্যাতন ও দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবির মামলায় আমাকে আসামি হতে হয়।

সে আমাকে আমার কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করায়। যে (মিলা) আমাকে কারাগারে পাঠাল, সেই আবার সাক্ষাতে গিয়ে শর্ত দিল যে জন্মদাতা পিতামাতাকে ত্যাগ করলেই জেল থেকে আমাকে মুক্তি দেবে।

আমার পক্ষে এমন প্রস্তাব মানা সম্ভব ছিল না। আসলে আমার পক্ষে মিলার সঙ্গে দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখার আর কোনো উপায় ছিল না।

সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ২২ মে ২০১৮ তারিখে আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হয়। গত এক বছর ধরে আইনগতভাবে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। সে আমার স্ত্রী না।

আইনি প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে আমি জামিনে মুক্ত হই। তার দায়েরকৃত বানোয়াট এই মামলায় আদালত চার্জ গঠনের পর থেকে গত দেড় বছরে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় মামলার বিচারিক পর্যায়ে আজ অবধি পরপর ছয়টি শুনানির একটিতেও সে সাক্ষ্য দিতে আসেনি, বিজ্ঞ আদালত সমন-জারি করা সত্ত্বেও।

অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সে একের পর এক আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েই চলেছে। অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো জনসমক্ষে এনে সে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেই যাচ্ছে।

প্রতিনিয়ত আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে চলেছে। সে নিজেই তার বক্তব্যে স্বীকার করেছে যে, সে আমাকে ছাড়বে না এবং ভক্তদের নিয়ে আমাকে রাস্তায় নামিয়ে জুতাপেটা করবে (সুত্রঃ সময় টিভি সাক্ষাৎকার ২৪/০৪/১৯)।

আমার জেল-জরিমানাও দাবি করছে। অথচ আমি এই পর্যন্ত তার প্রতি কোনোরুপ সম্মানহানিকর বক্তব্য কোথাও একবারও উচ্চারণ করিনি।

এতকিছুর পরেও সে হাস্যকরভাবে আমার সঙ্গে সংসার করতে চাইছে, আমাকে নিজের স্বামীও দাবি করছে। এই স্ববিরোধীতাপূর্ণ বক্তব্যের বিচারভার আমি আপনাদের কাছে দিলাম।

তার বক্তব্যে এটা সুস্পষ্ট যে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে আমাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করাটাই তার এখন মূল লক্ষ্য।

কিছু কল্পনাপ্রসূত বানোয়াট উপাত্ত দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোনোটিই সত্যি নয়। অথচ লাগামহীনভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে আইনের বিচারেই তা সঠিক কিনা প্রমাণ হবে। আপনারা সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া রাখবেন|

– পারভেজ সানজারী (মিলার প্রাক্তন স্বামী) ’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply