ডাকসুর প্রার্থীকে রড দিয়ে পেটাল ছাত্রলীগ

|

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী ছিলেন ফরিদ হাসান। ছাত্রলীগ তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে মারধরের ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ফরিদ ওই হল শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ছাত্রলীগ থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। ফরিদ হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র।

ডাকসু নির্বাচনের সময় অভিযোগ ছিল, বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করে তাকে হল থেকে বিতাড়িত করেছে ছাত্রলীগ।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে সোমবার রাতে এসএম হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার ও হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে তাকে আবারও মারধর করার অভিযোগ উঠে।

মারধরে আহত ফরিদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তার কপালের ডান পাশ থেকে ডান কান পর্যন্ত ৩২টি সেলাই পড়েছে বলে জানা গেছে।

ফরিদ অভিযোগ করে বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এসএম হলে নিজের কক্ষে (১৫৯ নম্বর) ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ওয়াসিফ হাসান পিয়াসের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা তার কক্ষে গিয়ে তাকে বের হতে বলেন। তারা আমাকে টানাহেঁচড়া করে হলের ডাইনিং কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে ছিলেন হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান পিকুলসহ কয়েকজন।

ফরিদ বলেন, প্রথমে তাপস আমার ওপর চড়াও হন। তারা আমাকে বলতে থাকেন, ‘তোকে হলে থাকার সাহস কে দিয়েছে?’ ডাইনিং কক্ষে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজারের সামনেই ছাত্রলীগ নেতারা ফরিদকে মারধর করেন। পরে মারধর থেকে বাঁচতে দৌড়ে হল থেকে পালিয়ে যান তিনি। ফরিদ জানেন না তাকে কেন মারধর করা হয়েছে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আগে তার কক্ষে চারটি ইয়াবা রেখে তাকে হয়রানি করা হয় বলেও অভিযোগ তার।

তবে ফরিদকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার বলেন, এসএম হল সংসদ ও হল শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে সোমবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত একটি সভা হয়েছে। সভায় মাদক ও ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গৃহীত হয়েছে। ফরিদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ফরিদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতির প্রথম প্রয়োগ হয়েছে। তাকে কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি, ভদ্রভাবে হল ছাড়তে বলা হয়েছে। উত্তেজিত হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে থাকলে সেটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিষয়।

এ বিষয়ে এসএম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার বলেন, ফরিদের বিরুদ্ধে এর আগেও বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করতে মঙ্গলবার হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, মূলত ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ার কারণেই ফরিদের ওপর ক্ষোভ ছাত্রলীগের। তাকে হলে থাকতে না দেওয়ার ব্যাপারে হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকটি পক্ষের নেতারা একমত। তবে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফরিদের জনপ্রিয়তা আছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply