বিরল রোগে থমকে গেছে আবদুল্লাহর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন

|

দুর্গম চরাঞ্চলের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন (২১)। দারিদ্র্য আর শত প্রতিকূলতাকে মাড়িয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চরবিনানই গ্রামের এ মেধাবী ছাত্র। কিন্তু বিধিবাম, বাবার মৃত্যু যে ছেলেকে থামাতে পারেনি, তাকে থামিয়ে দিয়েছে বিরল এক রোগ।

প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে এখন তাকে গ্রামে বসে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে। আশায় থাকতে হচ্ছে, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি তার চিকিৎসার খরচ বহনে এগিয়ে আসেন, তবে সুস্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পাবেন তিনি।

আবদুল্লাহ আল মামুন দুর্গম চরবিনানই গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে। সিরাজগঞ্জসহ দেশের কোথাও তার রোগ নির্ণয় করতে না পারায় ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ জন্য মামুনের দরকার আড়াই লাখ টাকা।

অসুস্থ আবদুল্লাহ জানায়, বাবার মুদি দোকানের আয় দিয়ে তাদের পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। চলত তিন ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ। কিন্তু ২০১০ সালে হঠাৎ বাবা মারা যান। এর পরের বছর দোকানটিও যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়।

আবদুল্লাহ আরও জানান, ঢাকার সাভার মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার অংশ নিয়ে তিনি ভালো ফল করেন। স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পর বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করবেন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

এর পর ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও রোগ নির্ণয় করা যায়নি।

সর্বশেষ তিনি ঢাকার ধানমণ্ডি আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রফেসর ডা. আলমগীর চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তবে অর্থাভাবে গ্রামে ফিরে আসতে হয়েছে।

রোগ নির্ণয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য আড়াই লাখ টাকা দরকার জানিয়ে আবদুল্লাহ বলেন, আমি দেশের বিত্তবান নিকট আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সম্ভুদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাহহার সিদ্দিকী জানান, আবদুল্লাহ আমার বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিল। অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন তার স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পথে। চিকিৎসকরা ভারতে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে ছেলের উন্নত চিকিৎসার অর্থ জোগান দেয়া তার দরিদ্র মায়ের পক্ষে সম্ভব না। এ জন্য সহৃদয়বানরা এগিয়ে এলে বেঁচে যেতে পারে এবং স্বপ্নপূরণ হতে পারে আবদুল্লার।

আবদুল্লাহকে সাহায্য পাঠাতে রোগীর মোবাইল নম্বর ০১৮৫৮২১৯৫৪৩ অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের মোবাইল ০১৭১৮৯২১৩১৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply