গাইবান্ধায় মা-মেয়েকে নির্যাতন, ক্ষোভে মেয়ের আত্মহত্যা

|

???????????????????????

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সদর উপজেলায় কলার বাগানে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে মা-মেয়েকে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ ও অপমান সইতে না পেরে শ্রাবন্তি রানী (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত লিখন ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ধনকুটি গ্রামের নিজ বাড়িতে ঘরের তীরের (ধর্ণা) সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

শ্রাবন্তি রানি ধনকুটি গ্রামের শ্রী গংগা দাসের মেয়ে। গংগা দাস চট্টগ্রামে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শ্রাবন্তি লক্ষ্মীপুর স্কুল এ- কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। এদিকে, ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেলে স্কুলছাত্রী শ্রাবন্তির একটি ছাগল প্রতিবেশী তপন চন্দ্রের কলার বাগানে যায়। কলার বাগান নষ্টের অভিযোগে ছাগলটিকে আটক করে বাড়ি নিয়ে যায় তপনের ছেলে লিখন। খবর পেয়ে ছাগলটি আনতে লিখনের বাড়িতে যায় শ্রাবন্তির মা দিপ্তি রানী। এসময় লিখন ও তার পরিবারের লোকজন তাকে গালিগালাজ করে মারধর করতে থাকে। পরে লিখন শ্রাবন্তির বাড়িতে এসে শ্রাবন্তিতে তুলে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় লিখন ও তার পরিবারের লোকজন মা ও মেয়েকে মারধর এবং শারীরিক নির্যাতন করে। পরে ছাগল না নিয়ে শ্রাবন্তি বাড়িতে এসে সবার অজান্তে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, কলার বাগান নষ্টের অভিযোগে প্রতিবেশী লিখন ও তার পরিবারের লোকজন মা-মেয়েকে মারধর ও নির্যাতন করে। অপমান সইতে না পেরে ক্ষোভে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শ্রাবন্তি। আত্মহত্যার আগে বাড়িতে আসার সময় শ্রাবন্তি আপমান ও ক্ষোভে চিৎকার করে বলছিল, ’এ জীবন আর রাখবো না আমি’। মা-মেয়েকে একসঙ্গে মারধর ও নির্যাতনের ঘটনায় মানসিক আঘাত সইতে না পেরে শ্রাবন্তি আত্মহত্যার পথ বেচে নেয় বলে দাবি পরিবারের।

গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাহাত গাওহারি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে শ্রাবন্তির মা দিপ্তি রানি বাদি হয়ে তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত লিখন তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, ক্ষোভ ও অপমান সইতে না পেরে স্কুলছাত্রী শ্রাবন্তির আত্মহত্যার ঘটনায় বিচার দাবিতে ফুঁসে উঠেছে স্বজন, সহপাঠী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা সুন্দরগঞ্জ-গাইবান্ধা সড়কের লক্ষ্মীপুর বাজারে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী অংশ নেয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply