চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহত ডা. আশরাফুল হকের বাড়িতে শোকের মাতম

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ডা. বন্ধু ইমতিয়াজ ইমরুল রাশুর চেম্বার পুরান ঢাকার চকবাজারে মদিনা ডেন্টাল ক্লিনিকে ব্যবহারিক কাজ শিখতে গিয়েছিলেন ডা. আশরাফুল হক রাজন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে প্রথমবার পুরাতন ঢাকায় গিয়েই লাশ হয়ে ফিরলেন ডা. আশরাফুল হক রাজন। তার সাথে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন তার বন্ধু ও ক্লিনিক মালিক ঢাবির ছাত্র কাউছার আহম্মেদ।

আশরাফুল বিকেলে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মাকে বলে গিয়েছেন ফিরতে দেরি হবে। মা গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর যোগাযোগের জন্য ফোনে রিং দিলেও ফোন ধরছিলনা ছেলে। সকালে তার পরিবার বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে গিয়ে জানতে পারে বন্ধুর সাথে দেখা করতে পুরাতন ঢাকায় গিয়েছেন আশরাফুল। তখনই তার ভাইরা ছুটে যান পুরান ঢাকার চকবাজারে।

ঘটনাস্থলে যেতে না পেরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তারা। হাসপাতালে আহতদের তালিকায় ভাইকে না দেখতে পেরে উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে যায় তাদের। একসময় মর্গে গিয়ে লাশ সনাক্ত করে তার ছোট ভাই মো. ফখরুল হক সুজন। তার মৃত্যুর খবর তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে মৃত্যুর সংবাদ পৌছলে তার আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

বাবা জামশেদ মিয়ার স্বপ্ন পূরণ করতেই ডেন্টাল মেডিকেল কলেজে ডেন্টাল বিভাগে ভর্তি হন ডা. আশরাফুল হক রাজন। নিজ গ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে নিজ বাড়িতে বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা করবেন এই স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিলেন বন্ধুর কাছে ব্যবহারিক কাজ শিখতে। কিন্তু তার এই সুন্দর স্বপ্ন কেড়ে নেয় এই ভয়াবহ আগুন। শুধু তাই নয় তার সাথে আরও দুই বন্ধুর স্বপ্নের পরিসমাপ্তি ঘটে অগ্নিকাণ্ডে লেলিহান শিখায়।

বৃহস্পতিবার রাতে তার ক্যাম্পাস বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে প্রথম জানাজা ও শুক্রবার তার গ্রামের বাড়ি ফরদাবাদে সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ডা. আশরাফুল হকের বাবা জামশেদ মিয়া জানান আমার ছেলে খুবই মেধাবী ও ধার্মিক ছিল। আমার ইচ্ছা ছিল ছেলে ডা. হয়ে গ্রামের মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিবে। আমার ইচ্ছা পূরণ করতে সে সবসময়ই চেষ্টা করতো। আগুন আমার ছেলেকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিল।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply