যানজটে আটকে পড়ায় পুড়লো রাস্তায় থাকা মানুষ

|

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় একটি আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সময় রাস্তায় যানজটে আটকে থাকায় অনেকে প্রাণে রক্ষা পাননি। আগুনের কবল থেকে পালিয়ে বাঁচার আগেই মৃত্যু তাদের গ্রাস করে নিয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, চুড়িহাট্টা বড় মসজিদের সামনের চৌরাস্তায় প্রায় যানজট লেগে থাকে, অগ্নিকাণ্ডের সময় এর ভয়াবহতা এতটা তীব্র ছিল যে, সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় অবস্থানরত প্রাইভেটকার, রিকশা, সাইকেল, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা যায়, চুড়িহাট্টা ওহাব ভবনের সামনে পড়ে আছে প্রায় ৩০টির মতো রিকশা, চারটি পিকআপভ্যান, তিনটি প্রাইভেটকার, প্রায় ২০টির মতো মোটরসাইকেল। আগুনে পুড়ে এগুলোর অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে। বডি স্প্রে ও রাসায়নিক কারখানা থাকায় আগুনের ভয়াবহতা বেশি ছিল।

সড়কজুড়ে বডি স্প্রে ও সুগন্ধির বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের বলেন, যখন সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে, তখন লোকজন দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে কেউ কেউ নিরাপদে সরে যেতে পারেননি। অনেকে গাড়ির ভেতর থেকে বের হওয়ার আগেই গাড়িতে আগুন ধরে যায়, আশপাশে ভবনের আগুন লেগে অনেক দোকানি মারা গেছেন।

ইকবাল আহমেদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, অনেকে গাড়ি থেকে বের হয়েছেন। বের হওয়ার পর আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ পাননি। অনেক রিকশা যাত্রী ও সাইকেলচালকও আগুনের কবলে পড়ে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, বেশি মারা গেছেন রাস্তায় থাকা লোকজন। আগুন লাগার পর যারা ভবন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাস্তায় এসেছেন, তাদের অনেকে প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারেননি।

ফায়ার সার্ভিসের প্রধান আলী আহমেদ দোহাভিত্তিক আলজাজিরা টেলিভিশনকে বলেন, একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। আর ভবনের ভেতর প্লাস্টিকের দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ থাকায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, চারটি লাগোয়া অবকাঠামোর ভেতর দিয়ে আগুনের বিস্তার ঘটেছে। এসব ভবনে প্লাস্টিকের দানা ও বডি স্প্রের মজুদ ছিল।

‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- আগুন যখন ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন সড়কজুড়ে যানজট ছিল। এতে সরু গলির ভেতর দিয়ে লোকজন পালাতে পারেননি।’

অগ্নিকাণ্ডে আহত হাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, আমি নিজ চোখে দেখেছি- ব্যাপক বিস্ফোরণে রাস্তার পাশে দেয়াল ভেঙে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়েছে।

‘বিস্ফোরণটি যখন ঘটে, তখন আমি রিকশায় ছিলাম। রিকশাটির চালক বেঁচে আছেন কিনা, তা আমি জানি না।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply