হাওর দুর্নীতি মামলার আসামিকে চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মনোনয়ন

|

সিলেট ব্যুরো:

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮৭ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খায়রুল হুদা চপলকে। যিনি ২০১৭ সালে হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতর অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি।

হাওর দুর্নীতি মামলার আসামিকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এতে দল ও সরকারে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে বলেও মনে করেছেন অনেকে। দলের নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার যেহেতু দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে, এই মুহূর্তে তাকে মনোনয়ন দেয়াটা ভালোভাবে নেবে না সাধারন মানুষ। দলে আরও অনেক ত্যাগী নেতা ছিল, তাদেরকেও মনোনয়ন দেয়া যেতো।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা বলেন, হয়তো দলের হাইকমান্ডের কাছে এ তথ্যই নেই, তা না হলে এমন অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তাকে মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত অন্তত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিতে পারে না।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যে, সরকার যেটা বলে সেটা কাজের জন্য নয়, মানুষের বাহবা কুড়াতে। তা না হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী সব সমাবেশে কঠোর অবস্থানের কথা জানাচ্ছেন। কিন্তু তার বিপরীতে আমরা কি দেখছি? দুর্নীতিবাজদের প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, এটা উচিৎ হয়নি। মামলার তদন্ত চলছে, এসব কাজ তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে।

২০১৭ সালে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় হাওরের হাজার কোটি টাকার ফসল। এনিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় ওঠে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে সে বছরের ২ জুলাই হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালনা কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৫ কর্মকর্তা ও বাঁধের কাজের ৪৬ জন ঠিকাদারকে আসামি করা হয়। এই ঠিকাদারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল।

মামলা দায়েরের পর ওই বছরের ১৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় তিন মাস কারাভোগের পর ওই বছরের নভেম্বরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে নাম ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার অন্য উপজেলাগুলোর মধ্যে জামালগঞ্জে মো. ইউসুফ আল আজাদ, শাল্লায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, বিশ্বম্ভরপুরে মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার, ধর্মপাশায় শামীম আহমেদ মুরাদ, ছাতকে মো. ফজলুর রহমান, দোয়ারাবাজারে আব্দুর রহিম, দিরাইয়ে প্রদীপ রায়, তাহিরপুরে করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবলু ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে মো. আবুল কালামকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।

যমুনা অনলাইন: আরএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply