ইউনূস হিলারিকে বলেন বাংলাদেশকে শায়েস্তা করতে: জয়

|

দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। পদ্মা সেতুর কাজ ঠেকাতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস হিলারি ক্লিনটনকে ফোন করেন, তাতেও কাজ হয়নি কারণ শেখ হাসিনা হিলারির গোলাম নয়। এমন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে কানাডার আদালতে বাঙালিদের নিয়ে যত কেস হয়েছিল সব খালাস হয়ে গেছে। কানাডার আদালত একে গুজব বলে রায় দেয়। গুজবের ওপর ভিত্তি করে এত বড় ষড়যন্ত্র কিভাবে হয়?

আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) পদ্মা সেতু নিয়ে ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়। এসময়, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একশ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

জয় বলেন, ‘নরওয়ের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে ওঠে আসে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১০০  মিলিয়ন ডলার অর্থ সেদেশে পাচার হয়। ইউনূস আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করলে নরওয়ে সরকার চিঠি লিখে জানায়, টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। তারা কিন্তু অর্থপাচারের কথা অস্বীকার করেনি। তারা ফেরত দিয়েছে ৩০ মিলিয়ন ডলার, বাকি ৭০ মিলিয়ন ডলার কোথায় গেলো? আসল ঘটনা হলো— একশ মিলিয়ন ডলার চুরি করা হয়েছিল। এটা চুরি। এই টাকার মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলার পরে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। বাকি ৭০ মিলিয়ন ডলারের কোনও হিসাব নাই। মুহাম্মদ ইউনূস তাদের আর্জেন্ট চিঠি লিখেন, আমাকে বাঁচাও।’

সুশীল সমাজকে বিদেশিদের দালাল আখ্যায়িত করে জয় বলেন, তারা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে টেনে নামাতে ব্যস্ত। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নয়, দেশকে ধ্বংস করার জন্য তারা কাজ করেন। সমালোচনা করলেই তারা টাকা আনতে পারেন। বিভিন্ন সংস্থার সেমিনারে তারা যে বক্তৃতা দিয়ে বেড়ান, এর অর্থায়ন করেন কারা?’

পদ্মা সেতুর প্রকল্পের সময় বিশ্ব ব্যাংকের তদন্তকারী ওকাম্পো দুর্নীতি দমন কমিশনে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানকে গ্রেফতারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন উল্লেখ করে জয় বলেন,’দুদকের চেয়ারম্যান বললেন, এই তথ্য দিয়ে তো একজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টাকে গ্রেফতার করতে পারি না। এটা সম্ভব না। এখানে কোনও মামলা নেই। কিন্তু ওকাম্পো এমনভাবে দুদকের চেয়ারম্যানকে হুকুম করেন, যেন দুদকের চেয়ারম্যান তার গোলাম। সেই ওকাম্পোর বিরুদ্ধে এখন দুর্নীতির মামলা চলছে।’

জয় বলেন, ‘প্রথম যখন সরকারের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হলো, তখন বাস্তবতা কী? তখন প্রজেক্ট শুরুও হয়নি। বিশ্বব্যাংক তখনও একটি পয়সাও দেয়নি। যেখানে কোনও টাকাই খরচ হয়নি, সেখানে দুর্নীতি কিভাবে সম্ভব? এ প্রশ্ন তোলা হলে তারা বললো, দুর্নীতি না, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তখন আমরা তাদের কাছে দুর্নীতির তথ্য চাইলাম। এই তথ্যের কথা আপনারা সবাই জানেন। একটি ডায়েরির এক পৃষ্ঠা। কোনও চিহ্ন নেই এটা কোথা থেকে এসেছে। এটা তো আমিও জানাতে পারি। এর তো অথেনটিসিটি প্রয়োজন। কিন্তু কিচ্ছু ছিল না। তখন বিশ্বব্যাংকের তদন্তকারী ওকাম্পো। তিনি দুদকের চেয়ারম্যানের অফিসে বসে অনেক আলোচনা করলেন। তার কাছে বারবার তথ্য চাওয়া হলো। কিন্তু তিনি ওই এক ডায়েরির পৃষ্ঠা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারলেন না।’

ওয়ান-ইলেভেনের সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইউনূসের রাজনীতিতে আসা নিয়ে জয় বলেন,’তিনি জানেন, নির্বাচন করলে একটা সিটও পাবেন না। আবার সুশীলদেরও লোভ আছে। তারা মনে করে, তারা সুশিক্ষিত। এত সুন্দর ইংরেজি বলে, বিদেশিদের সঙ্গে তাদের অনেক খাতির। কিন্তু মনে রাখতে হবে, মানুষের ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় আসা যায় না।’

তাকে আমেরিকা এম্বেসির এক কর্মকর্তা তাকে দু’বার হুমকি দিয়েছিল উল্লেখ করে জয় বলেন,‘সে আমাকে বলে যে আমার ট্যাক্সের হিসাব নেয়া হতে পারে। সৎ থাকলে সুবিধা আছে। আমি তার কথাকে হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলাম।’

এই পর্যায়েও ষড়যন্ত্র হয়েছিল উল্লেখ করে জয় বলেন, সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আজ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। এজন্য সরকারের আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি সেখানে মেধাবিদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা হিসেব করে দেখেছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব এবং তাতে দেশের উপর চাপ পড়বে না।

যমুনা অনলাইন: টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply