বাবা-মায়ের কবরের পাশে শায়িত আমজাদ হোসেন

|

বাবা-মায়ের কবরের পাশে শায়িত হলেন প্রয়াত কিংবদন্তি চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন। রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে জামালপুর পৌর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।

প্রয়াত আমজাদ হোসেনের বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল জানান, ‘আমার দাদা-দাদির কবরের পাশেই সমাহিত করা হয়েছে বাবাকে। এটাই ছিল তার শেষ ইচ্ছা।’

এর আগে ২২ ডিসেম্বর (শনিবার) রাত সাড়ে ১০টায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা থেকে জামালপুর শহরের ইকবালপুরে নিজ বাসভবনে তার মরদেহ পৌঁছায়। এরপর তার মরদেহ আজ সকাল ৯টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় (জামালপুর নতুন হাইস্কুল) মাঠে রাখা হয়। জামালপুরে তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ও একনজর দেখতে জনসাধারণ ভিড় করেন।

এসেছিলেন জামালপুর-৫ (সদর) বর্তমান এমপি রেজাউল করিম হীরা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।আমজাদ হোসেনের জানাজায় অংশ নেন জামালপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা। আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও ভক্তরা ছাড়াও শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তিরাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন।

রাতে আমজাদ হোসেনের বাড়িতে এসেছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

গত ১৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বাংলাদেশ সময় দুপুরে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান প্রয়াত এ চিত্র পরিচালক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি প্লেনে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় তার মরদেহ। পরদিন ২২ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভক্তদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় সিক্ত হন কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন। এ সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সহকর্মী, চলচ্চিত্র অঙ্গণের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও ভক্তরা ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাকে।

শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর দুপুর সাড়ে ১২টায় আমজাদ হোসেনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এটিএন বাংলা কার্যালয়ে।এরপর নিয়ে যাওয়া হয় তার প্রিয় কর্মস্থল এফডিসিতে। সেখানে একটি জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চ্যানেল আই কার্যালয়ে। সেখানে হয় আরেকটি জানাজা। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের শেষে দাফনের জন্য মরদেহবাহী গাড়ি করে আমজাদ হোসেনের মরদেহ জামালপুর শহরের ইকবালপুরে নিজ বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় ইকবালপুরে নিজ বাসভবনে পৌঁছায় তার মরদেহ।

প্রয়াত এই গুণি চিত্র পরিচালক গোলাপি এখন ট্রেনে, ভাত দে, কসাই, নয়নমণি, দুই পয়সার আলতা’, জন্ম থেকে জ্বলছি’সহ এমন আরও কিছু জনপ্রিয় সিনেমার কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক।

চলচ্চিত্রশিল্পে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতস্বরুপ তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ একাধিক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply