মাহফিলে এসে জনরোষের শিকার হেলিকপ্টার হুজুর, ফিরলেন ট্রেনে

|

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনার চাটমোহরে হেলিকপ্টারে চড়ে জালসা করতে এসে চুক্তি অনুযায়ী ওয়াজ না করায় আয়োজক ও মুসল্লীদের জনরোষের শিকার হতে হয়েছে প্রধান বক্তা মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিক (কুয়াকাটা) ওরফে হেলিকপ্টার হুজুর।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর শহরের বালুচর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বক্তাকে ছাড়াই হেলিকপ্টার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে চলে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তিনি ট্রেনে করে ফিরে যান।

জালসা কমিটি ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ছোট গুড়াখাড়া-চিরইল-সাড়োরা-ইঁচাখালী সম্মিলিত হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানায় ইসলামী জালসার দিন ছিল আজ। জালসার প্রধান বক্তা মওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিক (কুয়াকাটা)কে প্রায় এক বছর আগে ৫০ হাজার টাকা বায়না দেন। চুক্তি ছিল জালসার দিন বাদ জোহর থেকে বাদ আসর পর্যন্ত ওয়াজ করবেন। সেই সাথে হেলিকপ্টারে যাওয়ার জন্য ভাড়া বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী জালসা কমিটি হেলিকপ্টারের ভাড়া পরিশোধ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা থেকে একটি হেলিকপ্টারে চড়ে পৌর শহরের বালুচর মাঠে নামেন প্রধান বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক।

এরপর আড়াইটার সময় জালসাস্থলে গিয়ে ওয়াজ শুরু করেন। প্রায় চল্লিশ মিনিট ওয়াজ করে মোনাজাত শেষে তড়িঘড়ি করে বালুচর মাঠে এসে হেলিকপ্টারে চড়ার সময় জালসা কমিটি ও মুসল্লীরা বাধা দিলে সেখানে উত্তেজনা শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর সন্ধ্যায় পুলিশী পাহারায় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে তাকে তুলে দেয়া হয়।

জালসা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতি বছর চার গ্রামের মানুষ মিলে বড় জালসার আয়োজন করে থাকি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি (হাফিজুর রহমান সিদ্দিক) ওয়াজ না করে দ্রুত সময়ে চলে যাওয়ার সময় স্থানীয় মুসল্লীরা বাধা দেয় এবং ক্ষিপ্ত হয়। তিনি (প্রধান বক্তা) আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। কোন বছরই কোন বক্তা এমন করেনি। তিনি আমাদের অনেক ক্ষতি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাফিজুর রহমান সিদ্দিকের ব্যক্তিগত সহকারীর সাথে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেখ মো. নাসীর উদ্দিন বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে জনরোষের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে উদ্ধার করে চাটমোহর রেলষ্টেশন থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে টিকিট কেটে তুলে দেয়া হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply