ফিজের জাদুতে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয়!

|

কে জানতো আফগানিস্তানই এত বড় পরীক্ষা নেবে বাংলাদেশের। এশিয়া কাপ শুরুর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়কেই পাখির চোখ করেছিল টাইগাররা। সেটি হওয়ার পর আফগানদের বিপক্ষে পথ হারিয়ে ফেলা। সে ধারাবাহিকতায় ভারতের বিপক্ষেও যাচ্ছেতাই এক পরাজয়। আজ ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। সেটি গিয়ে ঠেকলো শেষ বলে! ১ বলে আফগানদের দরকার ৪। অনেকের মনেই ‘কু’ ডাকার কথা। এমন পরিস্থিতি থেকে যে বহুবার ম্যাচ হেরেছে টাইগাররা। কিন্তু মোস্তাফিজের দুর্বোধ্য বলটি ব্যাটেই লাগাতে পারলেন না ক্রিজে থাকা সেট ব্যাটসম্যান সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ।

আসলে শুধু শেষ বলের কথা বললে ম্যাচের উত্তেজনার চিত্র পুরোটা আসে না। আফগানরা যেভাবে ব্যাট চালাচ্ছিল তাতে ওভার প্রতি ৮/১০ রান কোনো বিষয়ই মনে হচ্ছিলো না। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৮ রান লাগতো তাদের। বল করতে আসা মোস্তাফিজ এর আগের ওভারেই বল করতে গিয়ে পায়ে টান খেয়েছেন। জয়টা খুব দূরের মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের কাছে। তবুও আশায় বুক বাঁধতে ক্ষতি কী! যারা আশাবাদীদের দলে ছিলেন ঠকেননি।

প্রথম বলে ২ রান দিয়ে দ্বিতীয় বলেই রশিদ খানকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে দিলেন ফিজ। আশা জাগিয়ে তোলা যাকে বলে। পরের বলে শেনওয়ারি লেগ বাই পেলেন। যদিও আউটের জোরালো আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান গুলবাদিন। ফিজের অফ স্ট্যাম্পে শিষ কেটে যাওয়া কাটারে পরাস্ত হলেন তিনি। পরের বলে আবারও লেগ বাই। শেষ বলে দরকার ৪ রান। ক্রিজে সেট ব্যাটসম্যান শেনওয়ারি। যাকে আম্পায়ার একবার আউট দেয়ার পর রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন। আরেকবার বাংলাদেশ রিভিউ নিয়েও সাজঘরে ফেরাতে পারেনি। তখন পর্যন্ত ১৮ বলে ২৩ রান করেছেন। টানটান উত্তেজনার মধ্যে দারুণ এক বল করলেন ফিজ। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে লাফিয়ে উঠা বলটি সজোরে হাঁকানোর চেষ্টা করেও ব্যাটে পাননি শেনওয়ারি। উল্লাসে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ।

আবুধাবিতে আসলে উত্থান-পতনের এক ম্যাচই হলো। শুরুতেই খেই হারিয়ে লিটন-মুশফিকের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানো। সেখান থেকে ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ যে শেষ পর্যন্ত ২৫০ রানের লক্ষ্য দিতে পারবে সেটিও আশা করা কঠিন ছিল। কিন্তু, দুই ‘আনসাং হিরো’ ইমরুল কায়েস ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ৭ উইকেটে ২৪৯ রানে গিয়ে ঠেকলো বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ ৮১ বলে ৭৪ রান করে ফিরে গেলেও হঠাৎই উড়ে গিয়ে দলের সাথে যোগ দেওয়া ইমরুল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৭২ রানে।

ব্যাট করতে নেমে কখনোই পথ হারায়রি আফগানিস্তান। শেষটাতে ফিজ জাদুতে যা গরমিল। থামতে হলো ৭ উইকেটে ২৪৬ রানে। অবশ্য, ৪৯-তম ওভারে ১১ রান দিলেও মোহাম্মদ নবীকে ফিরিয়ে জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন সাকিব আল হাসানও। তবে, সব কথার শেষ কথা অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাই বলে দিয়েছেন-শেষ ওভারটা মোস্তাফিজ করেছেন ম্যাজিশিয়ানের মতো। তাতেই এসেছে জয়।

পাকিস্তানের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে, টানা দুই ম্যাচে শেষ ওভারে, হেরে আফগানদের এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেলো। তবে, উন্নতির চিহ্নটা তারা ভালোভাবেই দেখিয়ে গেছে এবারের এশিয়া কাপে। বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের জয়ী দল যাবে ফাইনালে। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে ভারত।

যমুনা অনলাইন: টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply