ইউএস বাংলার পাইলটের অবসাদকেই দায়ী করলো নেপালি প্রতিবেদন!

|

সিসিটিভি ফুটেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগের ছবি

গত মার্চে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ বিধ্বস্তের ঘটনায় শুরু থেকেই ঘটনায় দায় এড়ানোর চেষ্টা করে আসছিল নেপালের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এবার তাদের তদন্ত প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে সেরকম তথ্য। নেপালের ইংরেজি দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্টে প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পাইলট আবিদ সুলতান ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। তিনি একের পর ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে কারণেই এমন দুর্ঘটনা।

দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেপাল সরকারের গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের অনুলিপি হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, পাইলট আবিদ সুলতান অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। বিমানের ককপিটে তিনি ক্রমাগত ধূমপান করছিলেন। নামার প্রস্তুতির সময় বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষকে তিনি অসত্য তথ্য দিয়েছিলেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে কাঠমাণ্ডু পোস্টের দাবি, অবতরণের সময়ের ছয় মিনিট আগে পাইলট আবিদ সুলতান ত্রিভুবনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষকে তার উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ার নামানো ও লক করার কথা জানিয়ে বলেন- ‘গিয়ারস ডাউন, থ্রি গ্রিনস।’ যদিও কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ অবতরণের আগে শেষ বারের মতো যখন সব ঠিকঠাক আছে কিনা যাচাই করছিলেন তখন ধরা পড়ে ল্যান্ডিং গিয়ার নামানো হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইট পরিচালনার পুরোটা সময়জুড়ে পাইলট আবিদ সুলতান অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন যেটি তার চরিত্রের সাথে খাপ খায় না। তখনই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেয়া উঠিত ছিল উল্লেখ করে নেপালি তদন্ত দল তাদের প্রতিবেদন সমাপ্ত করেছে।

কাঠমাণ্ডু পোস্ট বলছে, ককপিটের ভয়েস রেকর্ডার চেক করে তদন্ত দলের কাছে স্পষ্ট হয়েছে ক্যাপ্টেন মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। না ঘুমানোর কারণে তিনি ক্লান্ত ছিলেন। মাঝে মাঝে তিনি কেঁদেও উঠছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ দুপুরে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ মডেলের একটি বিমান কাঠমান্ডুতে নামার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে ৫১ আরোহীর মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি। ঘটনার পরপরই দুর্ঘটনার দায় পাইলটের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে নেপালের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, ইউএস বাংলার কর্মকর্তারা সেটি খারিজ করে দিয়ে বলে আসছেন, আবিদ সুলতানের সাড়ে ৫ হাজার ঘণ্টা ফ্লাইট চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল এবং এই মডেলের বিমান চালিয়েছেন ১৭০০ ঘণ্টারও বেশি।

যমুনা অনলাইন: টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply