আজ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস

|

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ। ৫৭ বছর আগে ১৯৬৬ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ছয় দফার পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ-আন্দোলনের সূচনা হয়। ছয় দফা ছিল শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির সাহসী উচ্চারণ। যা কয়েক বছরের ব্যবধানে হয়ে ওঠে বাঙালির প্রাণের দাবি। যার পথ ধরেই আজকের বাংলাদেশ।

পাকিস্তান নামে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পরও উপেক্ষিত ছিল বাঙালি। অথচ অর্থনীতির ৬০ শতাংশের যোগান দিতো পূর্ব পাকিস্তান। এই বঞ্চনার বিষয়টি তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর সম্মেলন ব্যর্থ হলে, পরে সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু।

৬৫’র পাক-ভারত যুদ্ধে অরক্ষিত হয়ে পড়ে পূর্ব পাকিস্তান। অর্থনৈতিক বৈষম্যের সাথে যোগ হয় নিরাপত্তা ইস্যু। যোগ্যতা সত্ত্বেও প্রশাসনের শীর্ষপদে উপেক্ষিত ছিল বাঙালি।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বললেন, অনেক রাজনৈতিক দল ও নেতারা স্বায়ত্বশাসনের কথা বলেছিলেন। কিন্তু কেউ এই স্বায়ত্বশাসনের রূপরেখা সম্পর্কে বললেননি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ছয়দফার মাধ্যমে বাঙালি জাতির ওপর নির্যাতন ও নিষ্পেষণ থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। এ জন্য মানুষ এই ছয়দফাকে মুক্তির সনদ হিসেবে গ্রহণ করেছিল।

তিনি বলেন, সেই ছয়দফার ভিত্তিতেই সেদিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পরও ক্ষমতা হস্তান্তর না করার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসন আর বাঙালির নায্য অধিকার। বাঙালির এই মুক্তি সনদকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি স্বৈরাচার আইয়ুব সরকার।

খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ছয় দফা। ভীত শাসকগোষ্ঠী কারারুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুকে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজিয়ে ফাঁসি দেয়ার চেষ্টা করে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে। কিন্তু লাভ হয়নি। জনগণের দুর্বার আন্দোলনে পতন হয় আইয়ুবের; বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বাঙালির স্বাধীনতার কাণ্ডারি।

দূরদৃষ্টি ও বিচক্ষণতায় ৬ দফাকে এক দফার দাবিতে পরিণত করে স্বাধীনতার ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। আর লাখো বাঙালির রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় প্রিয় স্বাধীনতা।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply