মেঘনায় কমছে ইলিশ, হতাশ জেলেরা

|

কাদের পলাশ:

সাগর থেকে চাঁদপুরের মেঘনার দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। নদী মোহনা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত নানা বাধার কারণে পরিভ্রমণ প্রিয় ইলিশ উপরে উঠে আসতে পারে না। তাই চাঁদপুরের মেঘনায় ইলিশের প্রাপ্যতা অনেক কম। জেলায় নিবন্ধিত জেলে প্রায় ৪৫ হাজার। এর বাইরে আরও অন্তত ২০ হাজার অনিবন্ধিত মৎস্যজীবী রয়েছে, যারা ইলিশের পরিমাণ নিয়ে হতাশ।

মেঘনা নদীতে আহরিত ইলিশে বড় একটি অংশেরই যোগানদাতা চাঁদপুরের জেলেরা। জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, ২০২০-২১ মৌসুমে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার মেক্ট্রিকটন, যা এর আগের মৌসুমগুলোর তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ বেশি।

অবশ্য মৎস্যজীবীরা বলছেন, এ হিসাবের সাথে তারা বাস্তবতার মিল পান না। সারাদিন মাছ ধরেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ। যা পাওয়া যায় তা দিয়ে নৌকার জ্বালানি খরচও ওঠে না।

সরেজমিনে দেখা গেল, বড় স্টেশন বাজারে যে ইলিশ আসে তার ৮০ ভাগই চাঁদপুরের জলসীমার বাইরের মাছ। আড়তদাররাও বলছেন, উপকূলে শিকার বেশি হওয়ায় চাঁদপুর পর্যন্ত উঠে আসতে পারে না ইলিশ।

গবেষকদের বক্তব্য, নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা বাড়াতে জালের ফাঁস নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৬ সেন্টিমিটার। যা বাস্তবায়ন হলে উজানে ইলিশ পাওয়া যাবে।

এ বিষয়ে ইলিশ গবেষক আশরাফুল আলম বলেন, জালের ফাঁস সাড়ে ৬ সেন্টিমিটার নির্ধারণ করা গেলে এবং জেলেরা সেটি যথাযথ পোলন করলে পদ্মা এবং মেঘনার উপপ্রবাহিকায় যেসব জেলেরা আছেন, তারাও মাছ পাবেন।

ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, বৃষ্টি হলে পানির প্রবাহ বেড়ে যাবে। এতে ইলিশের প্রাপ্যতাও বেড়ে যাবে আবার উৎপাদনও বাড়বে।

এদিকে, খাতা কলমে ইলিশ আহরণের তথ্য আছে, অথচ কত সংখ্যক জেলে জাল ফেলছে মেঘনায় সেই হিসাব নেই মৎস্য কর্মকর্তাদের কাছে।

চাঁদপুরের মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, নদীতে গিয়ে গিয়ে জরিপ করার মতো লোকবল আমাদের নেই। তাই নিয়ম অনুযায়ী যেখান থেকে মাছ বাজারজাত হচ্ছে সেখানে গিয়েই আমরা এই হিসেব নিই।

জেলেরা বলছেন, মেঘনায় এখন ইলিশের যে সংকট তাতে মাছ শিকার করে পেট চালানোই হয়ে পড়েছে কষ্টসাধ্য।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply