ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ কারিগরি নাকি মানবিক ত্রুটি?

|

ছবি: সংগৃহীত

একটি যাত্রীবাহী ও দুইটি মালবাহী- ওড়িশার বালাসোরে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে ভারত প্রত্যক্ষ করেছে ট্র্যাজেডি। এতে এরইমধ্যে নিহতের সংখ্যা তিনশো ছুঁইছুঁই বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। এছাড়া আহতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে পাঁচশোর বেশি। এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, কারিগরি ত্রুটি নাকি মানবিক ভুলে ঘটেছে এই প্রাণঘাতী ঘটনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, রেলওয়ের সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ওড়িশার বালাসোরে দুর্ঘটনায় পতিত করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি এ ঘটনার কয়েক মিনিট আগে ভুল পথ বেছে নিয়েছিল। শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যায় বাহানগর বাজার স্টেশনের ঠিক সামনে প্রধান লাইনের পরিবর্তে লুপ লাইনে উঠেছিল চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস।

খড়গপুর ডিভিশনের সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিওতে দেখা গেছে চারটি রেলপথ। এর মধ্যে দু’টি প্রধান লাইন এবং দু’টি লুপ লাইন। ভিডিওতে দেখা যায়, চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস ঘণ্টায় প্রায় ১২৭ কিলোমিটার গতিতে চলমান অবস্থায় লুপ লাইনে দাঁড়ানো পণ্যবাহী ট্রেনকে আঘাত করে এবং লাইনচ্যুত হয়ে প্রধান লাইনের উপর গিয়ে পড়ে। রেলওয়ের সেই সিনিয়র কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, এই সংঘর্ষের কয়েক মিনিটের মধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা হাওড়াগামী যশবন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি করমন্ডল এক্সপ্রেসকে আঘাত করে।

মানবিক নাকি কারিগরি ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সে সম্পর্কে এখনও কোনো স্পষ্টতা নেই। যদিও প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, দুর্ঘটনাটি মানবিক ত্রুটির ফলে হতে পারে। কারণ, করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনার কয়েক মিনিট আগে ভুল ট্র্যাকে উঠেছিল।

তবে, ইস্ট কোস্ট রেলওয়ে জোনের একজন অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং সিগন্যাল সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এই কর্মকর্তা জানান, স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে রাখা সিগন্যাল প্যানেল অনুসারে, পণ্যবাহী ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল রেলস্টেশনের লুপ লাইনে। তবে করমন্ডল এক্সপ্রেস যখন ঘণ্টায় ১২৭ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসে, তখন পণ্যবাহী ট্রেনের শেষের কয়েকটি বগি হয়তো প্রধান লাইনে ছিল।

এই দুর্ঘটনার পর টুইটারে অনেকেই দেশটির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণর কাছে জানতে চেয়েছেন, দুর্ঘটনা নিরোধী প্রযুক্তি ‘কাভাচ’ থাকার পরও তা কেন কাজে আসলো না। সে প্রসঙ্গে শনিবার (৩ জুন) দেশটির রেলওয়ে নিরাপত্তার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল সার্কেলের কমিশনার এ এম চৌধুরী জি নিউজকে জানান, রেলওয়ের যে রুটে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে এখনও আসেনি কাভাচ প্রযুক্তি। ভারতীয় রেলওয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানান, দুর্ঘটনার রুটটিতে কাভাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply