প্রখ্যাত সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার আর নেই

|

ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুলদীপ নায়ার আর নেই। বুধবার রাতে দিল্লীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৫ বছর। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লীর লোদী রোড়ে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

১৯২৩ সালে পাঞ্চাবের শিয়ালকোটে জন্ম নেন এ রাজনৈতিক বিশ্লেষক। জন্মমাসেই মৃত্যুকেও আলিঙ্গন করতে হলো তাকে। একাধারে তিনি ছিলেন সুচিন্তিত-সব্যসাচী লেখক, বামপন্থি ঘরানার তর্কবাগিশ এবং মানবাধিকার কর্মী। ব্রিটেনে কিছুদিন ভারতীয় হাই-কমিশনার ছিলেন। এছাড়া, ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এই কিংবদন্তীতুল্য সাংবাদিক।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শিয়ালকোটে জন্ম নায়ারের। শিক্ষাজীবনের প্রায় পুরোটাই ছিলেন লাহোরে। দেশভাগের পর, গোটা পরিবার চলে আসে ভারতে। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতার ওপর করেন স্নাতক।

‘দি স্টেটসম্যান’ সংবাদপত্রের দিল্লি সংস্করণের হয়ে কাজ শুরু করেন। ১৯৭৫ থেকে ৭৭ সাল পর্যন্ত দেশে জরুরি অবস্থা চলাকালে তিনি গ্রেফতারও হন। সম্পাদনা করেন, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। জীবদ্দশায়, ১৪ ভাষায় অনূদিত বিভিন্ন দেশের ৮০টি সংবাদপত্রের জন্য কলাম লিখতেন। বাংলাদেশের মূলধারার অনেক সংবাদপত্রেও ছিলো তার পদচারণা।

রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে বরাবর তিনি ছিলেন বজ্রকণ্ঠী। স্পষ্টভাবে মানবাধিকার কর্মী আন্না হাজারের ‘দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের’ সমর্থন করেন। মুক্তিযুদ্ধে, গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমাপ্রার্থণা না করায়, পাকিস্তানকে তিরষ্কার করতে ছাড়েননি।

বিয়ন্ড দ্যা লাইন্স, ডিসট্যান্ট নেইবার, অ্যা টেল অব দি সাবকন্টিনেন্ট, ইন্ডিয়া আফটার নেহরু, দি জাজমেন্ট প্রমূখ তার লেখা বই। কুলদীপ নায়ারের লেখনিতে সবসময়ই দেশভাগ, সীমান্ত এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক গুরুত্ব পেয়েছে।

অবশ্য, জীবনের একটা সময় তাকে পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে আখ্যা দিতেও পিছপা হয়নি কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। তাদের অভিযোগ ছিলো- প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দাদের সাথে বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে এই লেখককে।

জাগতিক সম্মাননার পাশাপাশি, ২০০৩ সালে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য পান অ্যাস্টর অ্যাওয়ার্ড কুলদীপ নায়ার। ২০০৭ সালে পান শহীদ নিয়োগী মেমোরিয়াল পুরস্কার।

কুলদীপ নায়ারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদিসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

যমুনা অনলাইন:এফএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply