মেগা বাজেট বাস্তবায়নে বিড়ম্বনায় পড়তে পারে সরকার; অর্থনীতিবিদদের মত

|

বৈশ্বিক সংকটকালে মেগা বাজেট বাস্তবায়নে সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, শুরু থেকেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ প্রয়োজন। নিত্যপণ্যের বাজারের উত্তাপ কমিয়ে আনতে ব্যর্থ হলে অস্বস্তি বাড়বে জনজীবনে। ব্যাপক সংস্কার ছাড়া রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দেবে। বিপুল ঘাটতি মেটাতে দেশি-বিদেশি উৎসের দিকে চেয়ে থাকতে হবে অর্থ বিভাগকে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, শুধু বরাদ্দ বাড়িয়ে নয়, স্বচ্ছতার সাথে অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতা অর্জন করা দরকার।

মূল্যস্ফীতির চাপে সীমিত আয়ের মানুষ। নিত্যপণ্য ও সেবা মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করছে। বিদায়ী অর্থবছরে ২ অংক ছুঁইছুঁই মূল্যস্ফীতির হার। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরের জন্যে প্রাক্কলন করা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, গতবারও আমরা ৫.৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ধরে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। কিন্তু আমরা এ বছরের শেষে এসে লক্ষ্য করেছি, এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি ৯.৬ শতাংশ। সুতরাং, আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারিনি। এবার সংকট আরেকটু বেশি। এর সাথে, আইএমএফ’র শর্তগুলো প্রতিপালন করতে হবে। উৎপাদন খরচ বাড়বে, পণ্যের দাম বাড়বে।

বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জন থেকে পিছিয়ে পড়েছে এনবিআর। এ অবস্থায় রাজস্ব আদায়ের আরও বড় প্রাক্কলন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ৫ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু রাজস্ব আহরণের প্রায়োগিক পথনকশা নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, এ কারণে অর্থবছরের শেষ প্রান্তে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে সরকারকে।

অর্থনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ বলেন, ট্যাক্সের নেটের আওতা যদি বাড়ানো যায় এবং করদাতাদের শনাক্ত করা গেলে জানা সম্ভব যে, তার কর প্রদানের সক্ষমতা আছে। এটাকে সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যারা কর দিচ্ছেন তাদের হয়রানি করে নয়, বরং যারা দিচ্ছেন না, যেসব জায়গায় কর প্রদানে অনীহা কাজ করে; সেসব জায়গায় বেশি করে নজর দেয়া উচিত। এনবিআর’র সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জনবল, প্রযুক্তি- যা দরকার তা জোগান দিতে হবে। এটাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

আইএমএফ’র ঋণের নানা শর্ত পূরণ করতে হবে আগামী অর্থবছরে। সে জন্যে থাকতে হবে সংস্কারের রোডম্যাপ। বিশ্লেষকদের মতে, নতুন বাজেটে সেসব বিষয় খুব একটা স্পষ্ট হয়নি। অর্থমন্ত্রীর আশাবাদ, ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ এগিয়ে যাবে দেশ।

আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেটের সাথে অর্থনৈতিক বাস্তবতার মিল নেই; সিপিডির প্রতিক্রিয়া

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply