চট্টগ্রামে দেদারসে চলছে ময়লার বাণিজ্য, আধিপত্য নিয়ে হানাহানির শঙ্কা স্থানীয়দের

|

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

ময়লা নিয়েও জমজমাট বাণিজ্য চলছে চট্টগ্রামে। মাসিক চাঁদার বিনিময়ে বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হয় বর্জ্য। প্রথম ধাপে ৩টি ওয়ার্ডে চলছে এ কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে বাকি ৩৮টি ওয়ার্ডেও চালুর লক্ষ্য সিটি করপোরেশনের। তখন ময়লা বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়াবে বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। যা নিয়ে সংঘাতের শঙ্কা করছেন অনেকে।

বন্দরনগরীর উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে হাজিপাড়ায়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করছেন পাওয়ার সোর্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। এসব বর্জ্য দুপুর পর্যন্ত পড়ে থাকে সড়কের উপর। এরপর ভ্যান কিংবা থ্রি হুইলারে করে নিয়ে ফেলা হয় সড়কের কোনো ডাম্পিং কন্টেইনারে। এতোটুকু কাজের জন্য প্রতি ফ্ল্যাট থেকে ১০০ টাকা এবং সেমিপাকা ঘর থেকে ৫০ টাকা করে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

এই ওয়ার্ডটির পাশাপাশি, পশ্চিম ষোলশহর এবং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডেও বাসা বাড়ির ময়লা আবর্জনা অপসারণের দায়িত্বে আছে তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। যদিও সিটি করপোরেশনের মূল তিন কাজের একটি এই বর্জ্য অপসারণ, এ জন্য ৪ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত ট্যাক্সও দেন বাড়ি মালিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত এই তিন প্রতিষ্ঠানের একটি সাবেক এক কাউন্সিলরের, অন্য দুটির মালিকও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠজন।

পাওয়ার সোর্সের সাবেক কাউন্সিলর এবং চেয়ারম্যান জাবেদ নজরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি পাইলট প্রজেক্ট। সিটি করপোরেশনের ধারা অনুযায়ী আবেদন করেছি, সংশ্লিষ্ট কমিটি থেকে অনুমোদন মিলেছে।

পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম চালু করতে চায় সিটি করপোরেশন। এতে রাজধানীর মতো, ময়লা বাণিজ্য নিয়ে চট্টগ্রামেও হানাহানি হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন অনেকে।

চট্টগ্রামের সুশাসনের জন্য নাগরিকের সভাপতি আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ময়লা নিয়ে হানাহানি, মানুষকে জিম্মি করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘটনা আমরা রাজধানী হয় বলে শুনেছি। এসব যাতে চট্টগ্রামে আমদানি করা না হয়, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা দরকার। এটি নিয়ে ক্ষমতাবানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হবে, মাঝখানে আমরা নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমার বা কাউন্সিলরের সাথে তো লোকজন থাকবেই। কিন্তু কেউ যদি নিয়মনীতি মেনে কেউ ব্যবসা করতে চায়, তাহলে সমস্যা কোথায়?

চট্টগ্রামে ৪১ ওয়ার্ডে হোল্ডিং রয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ১৪০টি। প্রতি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ছয় থেকে ১২টি করে ফ্ল্যাট ধরলে বর্জ্য সংগ্রহ বাবদ সম্ভাব্য বাণিজ্য মাসে ১২ কোটি এবং বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply