ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রধান শিক্ষকের অভিনব প্রতারণায় হতবাক অভিভাবকরা (ভিডিও)

|

ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি করতে ওই ব্যক্তির সন্তানকে ভুয়া ভর্তি দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক অভিভাবক।

শত বছরের পুরোনো এ বিদ্যাপীঠে ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিরে বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে অস্থিরতা। অভিভাবকদের অভিযোগ, ম্যানেজিং কমিটিতে পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি করতেই তার সন্তানকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই স্কুলে ভর্তি করান প্রধান শিক্ষক সমর দেবনাথ। অথচ ওই শিক্ষার্থী রাজধানীর মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ালেখা করে। ২০২২ সালে ছাড়পত্র ছাড়াই তাকে রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সমাপনী পরীক্ষায় অংশ না নেয়ায়, চলতি বছর তাকে চতুর্থ শ্রেণীতেই ভর্তি দেখানো হয়।

ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন একজন অভিভাবক।

অভিযোগকারী অভিভাবক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, সে আমাদের এখানকার ভোটারও না। শুধু দাপট আর প্রভাব দেখানোর জন্যই এসব করেছে। নতুন স্কুলে ভর্তি হতে হলে যে ছাড়পত্র নিতে হয় সেসবের কিছুই নেই। ক্লাসে যায়নি, পরীক্ষাও দেয়নি। মূল উদ্দেশ্য হলো এই মেয়েটার বাবাকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বানানো। তদন্ত করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি করতে ও ওই শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক।

নবীনগর রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমর দেবনাথ বলেন, ২০২২ সালে বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড ও ছবিসহ তাকে ভর্তি করিয়ে যান ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক। ভর্তির পর থেকে সে ক্লাসে অনুপস্থিত। তার অভিভাবকের সাথে যোগযোগ করছি। তারা বলেছেন, তাকে স্কুলে নিয়ে আসবেন।

এদিকে, ওই শিক্ষার্থীর পুলিশ কর্মকর্তা বাবার দাবি, এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই তার। শিক্ষার্থীর অভিভাবক তৌহিদুল আরেফিন বলেন, এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। স্কুলের হেডমাস্টার আছেন। আপনারা ওনাকে ফোন দেন। আমাকে প্রশ্ন করে কোনো সদুত্তর পাবেন না।

নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রতনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র এখনও তার কাছে আসেনি। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল বলেন, প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি নতুন কমিটি গঠনের। কমিটি সংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনও আমাদের কাছে আসেনি। তথ্য আসলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সাথে দুই স্কুলে কোনো শিক্ষার্থীর ভর্তি থাকার সুযোগ নেই বলেও জানান এ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, নবীনগরের রতনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯১৩ সালে। স্কুলটিতে সাড়ে তিনশোর বেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে।

/এসএইচ



সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply