সাংবাদিক শাকিল হত্যাচেষ্টা মামলায় তিন আসামিকে ৪ মাসের কারাদণ্ড

|

সাংবাদিক শাকিল হাসান। ছবি : সংগৃহীত

যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসান ও ভিডিও জার্নালিস্ট শাহীন আলমকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি রহিম, জব্বার ও জাকিরকে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৩০ মে) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী এ রায় দেন।

পুরান ঢাকার দেবিদাস ঘাট এলাকায় ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর অবৈধ পলিথিন উৎপাদন নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিতে গিয়েছিলেন যমুনা টিভি সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসান ও ভিডিও জার্নালিস্ট শাহীন আলম। ফুটেজ নেয়ার সময় কারখানার মালিকরা টের পেয়ে হামলা করে তাদের ওপর। দু’জনকে মারধর করে ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। হামলা থেকে বাঁচতে পাশের মুদি দোকানে আশ্রয় নেন শাকিল। সেখানে গিয়ে আসামি রহিম গায়ে কেরাসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে শাকিল হাসানকে। ২০১৬ সালে ৬ নভেম্বর ঘটনার দিনই চকবাজার থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন শাকিল। মামলায় আসামি করা হয় রহিম, জব্বার, জাকির, শাওন হাওলাদার, অভি, হাবিবুর রহমানকে। এদের মধ্যে ৩ জনকে পুলিশ বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করেছিলে। পরে সবাই জামিনে বের হয়।

মামলায় শাকিল, ক্যামেরাপারসন শাহীনসহ ১২ জন সাক্ষ্য দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরাদুল ইসলামও তদন্তের আলোকে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন। এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হিসেবে হামলার সময় ক্যামেরায় ধারণ করা চার মিনিটের ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি মূল আসামিদের চিহ্নিত করতে তাদের স্থিরচিত্রও আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। হামলার প্রেক্ষাপট, হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে আর হত্যাচেষ্টা প্রমাণে এই ডকুমেন্টগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আদালত এসব তথ্যকে মামলার কার্যক্রমে অর্ন্তভুক্ত করেছেন।

সাক্ষীদের সাক্ষ্য শেষে ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মামলার যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করে দুই পক্ষ। ছয় বছর ধরে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে ওই দিনই রায়ের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেন সিএমএম আদালত। ২০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার কথা থাকলেও ওই দিন রায় ঘোষণা পিছিয়ে ১৮ অক্টোবর নির্ধারণ করেন আদালত। পরে পিছিয়ে আবার ৮ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করেন সিএমএম আদালত। ওইদিন রায় না দিয়ে ফুটেজের ডিভিডি তলব করে ১৩ ডিসেম্বর শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত। সেদিন বিচারক না থাকায় পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয় ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি। ওই দিনও বিচারক না থাকায় পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয় ২ মার্চ। ২ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা মোরাদুল ইসলাম পুনরায় সাক্ষ্য দেন। আদালতে পুনরায় জমা দেয়া ফুটেজ নিশ্চিত করে জানান, এই ফুটেজ আর আগে জমা দেয়া ফুটেজ একই। এ বিষয়ে পরবর্তী তারিখ দেয়া হয় ১৩ মার্চ। ১৩ মার্চ শাওন, হাবিবুর, কবিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ২৮ মার্চ পুনরায় যুক্তি উপস্থাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ২৮ মার্চ বাদীপক্ষ সময় চাইলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১৬ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। ১৬ এপ্রিল লিখিত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে বাদীপক্ষ। ওইদিন, ৯ মে রায়ের দিন নির্ধারণ করেন আদালত। ৯ মে রায় লেখা হয়নি জানিয়ে ১৬ মে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। ১৬ মে’তেও রায় দেননি আদালত। নতুন তারিখ নির্ধারিত হয় ৩০ মে।

বাদীর আইনজীবী এখলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া জানান, সাক্ষ্য ও নথিতে মামলাটি প্রমাণ করতে পেরেছি। তবে দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রত্যাশা করেছিলাম। সেটা হলে তা সাংবাদিকদের ওপর হামলা বন্ধে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতো। সাজা বৃদ্ধিতে আপিল করবে।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply