বারবার কেন ‘সাষ্টাঙ্গ প্রণাম’ করেন মোদি?

|

ছবি : সংগৃহীত

নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের আগে ভবনের মাটি ছুঁয়ে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার (২৮ মে) সকালে স্বর্ণদণ্ড সেঙ্গলের সামনে উপুড় হয়ে শুয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে হাত জোড় করতে দেখা যায় তাকে। এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল ২০১৪ সালেও। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

খবরে বলা হয়েছে, এর আগে অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাসের সময়েও মোদিকে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করতে দেখা গিয়েছিল। রামলালার মূর্তির সামনে ভূমিতে নত হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া, আরও একাধিক মন্দিরে পূজা দিতে গিয়ে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে।

কেন বার বার প্রণামের এই রীতি ‌অনুসরণ করেন প্রধানমন্ত্রী? সাষ্টাঙ্গ প্রণামের বিশেষত্বই বা কী?

সাষ্টাঙ্গ শব্দের অর্থ হল, অষ্ট অঙ্গ-সহ। অর্থাৎ, আট অঙ্গ দ্বারা যে প্রণাম করা হয়, তা-ই হল সাষ্টাঙ্গ প্রণাম। নিবিড় শ্রদ্ধা প্রকাশের সময় প্রণামের এই রীতি পালন করা হয়। এখন প্রশ্ন হল, এই আট অঙ্গ কী কী?

‘জানু, পদ, পাণি, বক্ষ, মস্তক, দৃষ্টি, বুদ্ধি এবং বাক্য’ হল অষ্ট অঙ্গ। এর মধ্যে জানু বা হাঁটু, পদ বা পা, পাণি বা হাত, মস্তক বা মাথা, বক্ষ বা বুক দ্বারা ভূমি স্পর্শ করা হয় সাষ্টাঙ্গ প্রণামের সময়। এ ছাড়া, দৃষ্টি বা চোখ, বুদ্ধি বা মনন এবং বাক্য বা মন্ত্রোচ্চারণও সাষ্টাঙ্গের অন্যতম অঙ্গ। এ সবের সহযোগে যে প্রণাম করা হয়, তা-ই সাষ্টাঙ্গ প্রণাম।

মোদি বরাবরই নিজেকে সনাতন ধর্মের সেবক বলে পরিচিত করে থাকেন। প্রথম থেকেই তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। যদিও আরএসএসে এ ধরনের সাষ্টাঙ্গ প্রণামের রীতি প্রচলিত নেই।

সঙ্ঘের ভাবধারায় বড় হয়েছেন মোদি। সঙ্ঘে ভূমি বা পৃথিবীকে দেবী মনে করা হয়। তাদের নিয়ম অনুযায়ী, সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে প্রথমবার পা রাখার আগে তাকে প্রণাম করতে হয়। স্বয়ং বিষ্ণুপত্নীর সঙ্গে এই ভূমির তুলনা করে তাকে প্রণাম করেন সঙ্ঘের অনুসরণকারীরা। অনেকে বলেন, এই ভাবধারার কারণেই যে কোনও মন্দিরে গেলে মোদিকে মাটি ছুঁয়ে প্রণাম করতে দেখা যায়।

সাষ্টাঙ্গ ছাড়া মোদিকে এর আগে পঞ্চাঙ্গ প্রণাম করতে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েক বার। হাঁটু মুড়ে বসে মাথা নত করে এই প্রণাম করা হয়। সংসদ ভবনে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করতে এর আগে তেমন ভাবে কাউকে দেখা যায়নি। মোদিই এই প্রণামের রীতি চালু করেছেন।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply