‘জিনের বাদশা’ চক্রের খপ্পরে পড়ে নারীর মৃত্যু

|

পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ে জীনের বাদশা চক্রের খপ্পরে পড়ে শামিমা আকতার সোনিয়া (২৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার গভীর রাতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক সুরত হাল করে। পরে ময়নাতদন্ত করা হয় ওই নারীর। মৃত নারীর বাড়ি পঞ্চগড় রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন ধাক্কামাড়া এলাকায়। সে ওই এলাকার সোলেমান আলীর মেয়ে।

সোনিয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, সোনিয়াকে প্রতিবেশী সোহেল ও আফরোজা দম্পতি বেশ কিছুদিন থেকে জীনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা এবং সোনা গহনা দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সর্বশেষে গতকাল বিকেল তিনটার দিকে সোহেল ও তার স্ত্রী আফরোজা বেগম মসজিদে বিভিন্ন ধরনের আমলের মাধ্যমে জীন টাকা দিবে বলে সোনিয়াকে জানালে এক পর্যায়ে সোনিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। এ সময় সোনিয়াকে আমল শিখিয়ে দেয়ার নামে জেলা শহরের উপকণ্ঠে হিমালয় বিনোদন পার্কে নিয়ে যায়। সেখানেই কথিত ওষুধের গুলি খাওয়ানো হয়। পরে সন্ধ্যার সময় পঞ্চগড় বাজারে সোনিয়ার বমি শুরু হলে সেখানে রেখে পালিয়ে যায় আফরোজা বেগম। পরে সোনিয়ার পরিবারের লোকজন সোনিয়াকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে রাত ৭টা ২০ মিনিটে ভর্তি করে। পরে রাত আড়াইটার দিকে সোনিয়ার মৃত্যু হয়।

মৃতের ভাই মনিরুজ্জামান মুন্না হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, আসলে আমার বোন সোনিয়ার মৃত্যুর জন্য সোহেল ও তার স্ত্রী আফরোজা দায়ী। আমাকে চাকরি দেয়ার নামে সোহেল এবং আফরোজা কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। রাতে জীনের নাম করে বিভিন্ন লোভ দেখিয়েছে। গতকাল জীনের কাছ থেকে টাকা পাইয়ে দেয়ার নাম করে আমার বোনকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যায় আফরোজা।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. তৌফিক আহমেদ জানান, অপরিচিত বিষক্রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই নারী। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ক্যামিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর পুরো বিষয়টি জানা যাবে।

অভিযুক্ত সোহেল পঞ্চগড় পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শকের সহকারী। ঘটনার বিষয়ে জানতে গেলে প্রথমে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরে সোহেল সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বিষয়ে সব অস্বীকার করে বলেন, আমার স্ত্রী এমন কোনো কাজের সাথে জড়িত নয়। এ সময় সোহেল নিউজ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, এই ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পঞ্চগড় পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফুল আলম জানান, আসলে সোহেল আফরোজা দম্পতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। আমার এলাকায় জীনের বাদশার কোনো কর্মকাণ্ড আমি সমর্থন করবো না। আমি চাই জীনের বাদশা কর্মকাণ্ডে যে জড়িত থাকবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply