বরিশাল সিটিতে হয়নি কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন, বিস্তর অভিযোগ মেয়র সাদিকের নামে (ভিডিও)

|

ফাইল ছবি

কাওসার হোসেন:

বরিশাল নগরীর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে পারেননি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। নিশ্চিত হয়নি নাগরিক সেবা। বিভিন্ন সময় বিরোধে জড়িয়েছেন কাউন্সিলরদের সাথে। এমনকি সম্পর্ক ভালো নেই সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও। বিধিমালার তোয়াক্কা না করে যাকে-তাকে দিয়েছেন নিয়োগ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করেছেন যখন-তখন।

বর্তমান পরিষদের দেড় বছরের মাথায় কাউন্সিলরদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। ১০ কাউন্সিলর প্রকাশ্যেই তার বিরোধীতা করেন। হাতে গোনা ৩ কাউন্সিলর বাদে বাকিরা এড়িয়েই চলেন মেয়রকে। শুধু কাউন্সিলর নয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও দূরত্ব বেড়েছে মেয়রের।

কাউন্সিলরদের অভিযোগ, অনেক সিনিয়র মানুষকে বিভিন্নভাবে অপমান-অপদস্থ করেছেন মেয়র সাদিক। তিনি সিটি মেয়র অথচ আজ পর্যন্ত একটা কাজের কমিটিও করতে পারেননি তিনি।

সিটি কর্পোরেশনে নিজের খেয়াল খুশিমতো নিয়োগ কিংবা চাকরিচ্যূতি; বেতন আটকানো কিংবা ওএসডিকরণ, মেয়রের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা জানালেন, শারীরিক-মানসিক সব ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছি না, ওদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। ধাপেধাপে ২০-৩০ জনকে চাকরিচ্যুত করেছেন মেয়র আর ওএসডি করেছেন অন্তত ১০০ জনকে। কোনো কারণ ছাড়াই বেতন দেয়া হচ্ছে না এমন কর্মচারীর সংখ্যা ১৫০-২০০ জন।

এদিকে, আইনজীবীরা বলছেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত বা বেতন বন্ধ রাখা সম্পূর্ণ বেআইনী। যদিও ভিন্ন মত সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহীর।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদ বলেন, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এগুলো নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সিনিয়র আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, কাউকে চাকরিচ্যুত করতে হলে তাকে আগে শোকজ পাঠাতে হয়। অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। এরপর তার ব্যক্তিগত শুনানী শেষে তাকে চাকরিচ্যুত করা যাবে।

এর আগে, বরিশাল নগরীর ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এলাকার একটি রাস্তা নির্মাণে সস্তা ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে ফেসবুক লাইভে গিয়ে ৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। অথচ এ নির্মাণ কাজের ঠিকাদার মাহফুজ খান লিমিটেডের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো ধরনের ব্যবস্থা। অভিযোগ আছে, গত পাঁচ বছরে এ সিটি কর্পোরেশনের সকল উন্নয়ন কাজ করেছেন হাতেগোনা ৩-৪ জন ঠিকাদার। তাদের মধ্যে মাহফুজ খান একজন। অভিযোগ আছে ঠিকাদার মাহফুজ খান সিটি মেয়রের ঘনিষ্ঠজন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা নেয়া হলো না? এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান নির্বাহী প্রকৌশলী।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল বাশার বলেন, আমি কাজ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে আপনাকে মতামত অবশ্যই দিতে পারি। কিন্তু প্রশাসনিক ব্যাপারে আমার বলার এখতিয়ার নেই।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply