টিনের কৌটায় মিলবে ইলিশ, দাম থাকবে সাধ্যের মধ্যেই

|

তৌহিদ হোসেন:

রঁসুইঘরে নয়, আগামীতে কৌটায় মিলবে সুস্বাদু ইলিশ। তাও আবার রান্না করা। মাছ সংরক্ষণ করা যাবে অন্তত এক বছর। এমন চমক দেখিয়েছে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাদের দাবি, গবেষণা সফল হলে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য। মাছের রাজা ইলিশ আসবে নিম্নবিত্তের নাগালে।

মাত্র কয়েক বর্গফুটের কামরায় চমক দেখিয়েছেন একদল তরুণ। তাদের গবেষণায় বদলে গেছে বাঙালির ইলিশ খাওয়ার রসনাবিলাস। বলা হচ্ছে, এখন থেকে ইলিশের পিস মিলবে টিনের কৌটায়, তাও আবার রান্না করা!


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত মাছ বিক্রির রেওয়াজ তেমন একটা নেই। প্রশ্ন আছে মাছের সংরক্ষণ আর স্বাদ নিয়ে। তবে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বিকল্প ভেবেছেন। তারা বলছেন, কৌটায় মাছের মাথা ও লেজ না দিয়ে এমনভাবে খাবার তৈরি হবে যেন মাছের টুকরো না ভেঙে যায়। প্রক্রিয়াজাতকরণের পর নরম হবে কাঁটা। ওভেনে ২-৩ মিনিট গরম করলেই পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত হবে এটি। স্বাদে বৈচিত্র্যের জন্য মাছে থাকবে আলাদা ফ্লেভারও।

এ প্রসঙ্গে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশিং অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রানা বলেন, আমরা যে টিনের কৌটায় মাছটি রাখছি সেটির ভেতরে জিঙ্ক অক্সাইডের প্রলেপ দেয়া আছে। প্রলেপ দেয়ার কারণে মাছের অ্যামাইনো এসিড ও টিনের মধ্যে বিক্রিয়া হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পুরো প্যাকেজিংয়ের পরে বাইরে বা ভেতরে বাতাস ঢোকারও কোনো উপায় নেই। ফলে, এই মাছ খাওয়া খুবই নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত হবে ক্রেতাদের জন্য।

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশিং অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রানা।

বাংলাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। মৌসুম ছাড়া ইলিশ কিনতে কেজিতে লাগে অন্তত দেড় হাজার টাকা। ছোট পিসের ক্ষেত্রেও ছেড়ে কথা বলেন না ব্যবসায়ীরা। তাই, দেশে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পাত থেকে ইলিশ একরকম উঠেই গেছে।

তবে গবেষকরা বলছেন, কৌটার ইলিশ মিলবে বছর জুড়ে। এক একটি ক্যানে রাখা যাবে ২০০ গ্রাম মাছ। গড়ে তিন টুকরো ইলিশের দাম হবে আনুমানিক ৩০০ টাকা। তাই জাতীয় মাছ থাকবে সবার সাধ্যের মাঝে।

শেকৃবি’র ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কাজী আহসান হাবীব।

শেকৃবি’র ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, যদি কারো মাঝারি আকৃতির একটি ঘর থাকে, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকে এবং সেখানে হাইজিন মেইনটেইন করে মাছ প্রক্রিয়াজাতকরনের বিষয়টি যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আপনি স্বল্প পূঁজিতে ও স্বল্প পরিসরে তৈরি করতে পারবেন। এটা যদি কেউ বড় পরিসরে করতে চায় সেটিও সম্ভব।

মৎস্য অধিদফতরের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প থেকে এ গবেষণার অর্থায়ন এসেছে। পরের ধাপে প্রশিক্ষণের জন্য কক্সবাজারে নির্বাচন করা হয়েছে তিনটি দল।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply