জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শহিদুল আলম আমাকে বাঁচিয়েছিলেন: তসলিমা নাসরিন

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম জীবনের ঝুঁকি তার প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তসলিমা আরও লেখেন, শহিদুল আলমের মতো সভ্য, শিক্ষিত, নির্ভীক মুক্তচিন্তককে ভিন্ন মত প্রকাশের জন্য আজ যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এ তাঁর নয়, এ গোটা দেশের লজ্জা। স্ট্যাটাসের সাথে শহিদুল আলমের তোলা তার কিছু ছবি শেয়ার করেন তসলিমা।

তার স্ট্যাটাসটি ছিল এমন-

‘১৯৯৪ সালে জুন মাসে খালেদা জিয়ার সরকার আমার বিরুদ্ধে ‘মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছি’ এই অভিযোগ করে বাংলাদেশ ফৌজদারি আইনের ২৯৫/এ ধারায় মামলা করেছিল, গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছিল। তখন আমার শুভাকাংখীরা উপদেশ দিয়েছিলেন, আমি যেন আত্মগোপন করি, কারণ ধর্মান্ধ পুলিশ অথবা জেলের ভেতর ধর্মান্ধ কয়েদিরা আমাকে খুন করতে পারে, ধর্মীয় অনুভূতি বলে কথা! আমার ওই চরম দুঃসময়ে আমাকে আশ্রয় দেওয়ার সাহস ঢাকা শহরে প্রায় কারোরই ছিল না। রাস্তায় তখন প্রতিদিন আমার ফাঁসির দাবিতে মিছিল করছিল লক্ষ লক্ষ মৌলবাদি। সেই সময় হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের বাড়িতে আমাকে লুকিয়ে রেখে আমাকে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন শহিদুল আলম। নিচের ছবিগুলো ওঁরই তোলা। আমি আজ তাঁর দুঃসময়ে তাঁকে চরম অসম্মান আর হেনস্থা থেকে বাঁচিয়ে আনতে পারছি না, সে ক্ষমতা আমার নেই। আমি শুধু এইটুকু বলতে পারি, শহিদুল আলমের মতো সভ্য, শিক্ষিত, নির্ভীক মুক্তচিন্তককে ভিন্ন মত প্রকাশের জন্য আজ যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এ তাঁর নয়, এ গোটা দেশের লজ্জা। আজ শহিদুল আলমের দুঃসময় নয়, আজ বাংলাদেশের দুঃসময়।’