মিশর থেকে বাংলাদেশি মৃত শ্রমিকের বকেয়া টাকা ফেরত আনলো মাদারীপুর পুলিশ

|

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর:

মিশরে একটি গার্মেন্টসে কাজ করা অবস্থায় মৃত্যু হয় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মো. বিল্লাল আকনের। মিশরের ওই কোম্পানীতে কর্মরত অবস্থায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা বকেয়া ছিল বিল্লালের। অবশেষে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের উদ্যোগে বকেয়া টাকা ফেরত পেয়েছেন বিল্লালের অসহায় পরিবার।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বিল্লালের পরিবারের কাছে অর্থ বুঝিয়ে দেয়া
হয়। এ সময় জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নিহতের পরিবার।

পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম খান জানান, জেলার শিবচর উপজেলার চরবাচামারা গ্রামের মৃত. মোতালেব আকনের ছেলে মো. বিল্লাল আকন প্রায় ১২ বছর মিশরের একটি গার্মেন্টসে কাজ করেছে। গত বছরের ১ মে কাজ করা অবস্থায় মারা যান তিনি। পরে তার লাশ দেশে এনে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে বিল্লালের পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। পরে ব্যক্তিগতভাবে আমি মিশরে বাংলাদেশি পুলিশের মাধ্যমে ওই কোম্পানিতে যোগাযোগ করাই । এতে দীর্ঘ আলোচনা আর চিঠি চালাচালির পর ওই কোম্পানি বিল্লালের বকেয়া ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত দেন। সেই টাকা বিল্লালের বৈধ ওয়ারিশ হিসেবে তার মা, স্ত্রী ও এক শিশু কন্যাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এই টাকা পেয়ে কিছুটা হলেও পরিবার ভালো থাকতে পারবে।

এ সময় বিল্লালের মা মুক্তি বেগমকে ৭০ হাজার, স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে ৫০ হাজার ও নাবালিকা মেয়ে আছিয়া আক্তারের নামে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেয়া হয়। মেয়ের টাকা ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ার আগে তুলতে পারবে না।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই দায়িত্ব শুধু পুলিশ হিসেবে নয়, ব্যক্তিগতভাবেও আমি অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছি।

টাকা পেয়ে বিল্লালের মা মুক্তা বেগম বলেন, আমার পোলাকে তো আর ফেরত পাবো না। আমরা ভাবছিলাম আর টাকা পয়সা পাবো না। কিন্তু পুলিশ আমাদের দিকে তাকানোর কারণে টাকা পাইলাম। তাদের জন্যে অনেক দোয়া করি তাদেরকে যেন আল্লাহ সুখে- শান্তিতে রাখে। এই টাকা রমজান মাসে অনেক উপকারে আসবে।

বিল্লালের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বলেন, পুলিশ সুপার স্যার যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে তার ঋণ কোনো দিনই শোধ করতে পারবো না। যে টাকাই পাইছি সবই তার জন্যে। আমার মৃত্যুর আগ দিন পর্যন্ত তার জন্যে দোয়া রইলো। এখন আমার নাবালক মেয়ের একটা ব্যবস্থা হইলো। যে টাকা পেয়েছি, তা দিয়ে মেয়েকে চালাতে পারবো। শিবচর থানা পুলিশ আমাদের উপকার করেছে।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply