পৌরসভা প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হলেও ঝুলে আছে নির্বাচন, নেই কোনো নতুন উন্নয়ন প্রকল্প

|

ফাইল ছবি

বেনাপোল প্রতিনিধি:

প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে বেনাপোল পৌরসভা পরিচালিত হচ্ছে গত প্রায় এক বছর ধরে। ইতোমধ্যে প্রশাসক নিয়োগের প্রথম ছয় মাসও অতিবাহিত হয়েছে। নতুন করে আবারও ছয় মাসের জন্য প্রশাসকের দায়িত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে। জানা গেছে, দৈনন্দিন কাজের পর সময় পেলে পৌরসভার কাজে আসেন প্রশাসক। ফলে পৌরসভার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পৌরবাসী।

এর আগে, দীর্ঘ দিনের গণদাবি মেনে ২০০৬ সালে বেনাপোলকে পৌরসভা ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। আর এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি। ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বেনাপোল পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা ঘোষণা করে সরকার। এরপর, ১২ জানুয়ারি ২০১৬ সালে মেয়াদ শেষে পৌরসভা নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হলেও আশরাফুল আলম লিটনের ইচ্ছায় সীমানা জটিলতার মামলা দায়ের করা হয়। ফলে, পৌরসভার নির্বাচন ঝুঁলে থাকে দীর্ঘদিন।

এভাবে দীর্ঘদিন চলার পর স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ধারা-৮ এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) সংশোধন আইন-২০২২ এর ধারা-৪ অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ বেনাপেলের পৌর পরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

এরপর, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ধারা ৪২ এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) সংশোধন আইন ২০২২ এর ধারা-৯ অনুযায়ী ২০২২ সালের ৫ই মে বেনাপোল পৌরসভায় ছয় মাসের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা হয় । কিন্তু, এখনও সেই সীমানা জটিলতার নাম করে পৌরসভার নির্বাচন বন্ধ রয়েছে।

১৮ কি.মি. আয়তনের এ পৌরসভায় প্রায় দশ হাজার পরিবারের এক লাখ বিশ হাজার মানুষের বসবাস। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পৌরসভার নতুন সড়ক, ড্রেন, সড়ক বাতি পানি সরবরাহসহ সব ধরনের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের অন্যতম পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, বেনাপোল দেশের বৃহত্তম স্থল বন্দর। সরকার এ বন্দর দিয়ে প্রতি বছর পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দশ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। দীর্ঘদিন এ পৌরসভার নির্বাচন বন্ধ থাকার ফলে আন্তর্জাতিকভাবে বেনাপোল পৌরসভাকে হেয় হতে হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশের লোক বেনাপোলে এসে যখন শোনে যে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন হয় না, তখন আমাদের দেশের সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

এ প্রসঙ্গে শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, বেনাপোল পৌরসভার উন্নয়নের স্বার্থে অবিলম্বে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। ঠুনকো অজুহাতে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ
থাকবে এটা মেনে নেয়া যায় না।

যশোর স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মো. হুসাইন শওকত (উপ-সচিব) এ ব্যাপারে জানান, বেনাপোল পৌরসভার সীমানা জটিলতার মামলা থাকার কারণে দীর্ঘদিন নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এরপর ২০২২ সালের ৫ এ মে বেনাপোল পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা যে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব সেটা প্রশাসক দিয়ে সম্ভব না। আমরা খুব দ্রুত আইনগত এ জটিলতা নিষ্পত্তির মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply