চীন থেকে বিমানে করে এলো পদ্মা সেতুর রেলের শেষ স্লিপার

|

আর মাত্র একটি স্লিপার বসালেই শেষ পদ্মা রেল সেতুর কাজ।

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:

ওপরে সড়কপথের পর এবার স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে। এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৯৯ ভাগ কাজ। বাকি আছে মাত্র আর একটি স্লিপার বসানোর কাজ। ৭ মিটার দৈর্ঘ্যের স্লিপারটি বসালেই সম্পন্ন হবে লাইন নির্মাণ। স্লিপারটি বসানো হয়ে গেলে আগামী বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) মাওয়া থেকে জাজিরা পুরো সেতুতে পরীক্ষামূলক রেল চলাচলেরও পরিকল্পনাও রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। .

প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, বাকি থাকা স্লিপারটি চীন থেকে বিমানে করে আনা হচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় স্লিপারটি রাজধানী ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। দ্রুতই সেটি প্রকল্পের সাইটে পৌছাবে।

প্রকৌশলী সূত্রে আরও জানা গেছে, শুধুমাত্র একটি স্লিপার মিস ম্যাচের জন্য দেরি হচ্ছে। আজ-কালকের মধ্যেই স্লিপারটি ফ্লাইটে আসার কথা। স্লিপারটি গত ২৫ তারিখে আসার কথা ছিলো। যদি কাজ শেষ হয়ে যায় তাহলে মন্ত্রী (রেলমন্ত্রী) মহোদয়ের উপস্থিতিতেই আগামী বৃহস্পতিবার সম্ভাব্য ট্রেন চলার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা নির্ভর করবে স্লিপারটি আসার ওপরে। স্লিপারের সাথে ৬ মিটারের কংক্রিটিং হবে। সেটি শক্ত হতে ৪৮ ঘণ্টা মতো সময় লাগে। তা না হলে সেটি উপর দিয়ে ট্রেন যেতে পারবে না।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্লিপারটি বাংলাদেশে পৌঁছেছে। প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানো মাত্রই ১২ ঘণ্টার মধ্যে বসানোর কাজ শেষ হবে। তারপরই কংক্রিটের কাজ করা হবে। স্লিপারটির জন্যই এখন অপেক্ষা। আমাদের ৯৯ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেল সেতুতে এখন ৮টি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। বাকি ৭টি যথাযথভাবে স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের ওই ইস্পাতের স্লিপারটি বসানো নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়। আর মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের ৮টি স্লিপার ছাড়া বাকি সবগুলো কংক্রিটের তৈরি। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এগুলো ফরিদপুরের ভাঙ্গাস্থ পুরোনো রেলস্টেশনের পাশে স্থাপিত কারখানায় তৈরি করেছে। একই সঙ্গে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেললাইনের সব স্লিপার একই কারখানায় তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিশেষ তাপমাত্রায় তৈরি মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের স্লিপারগুলো চীন থেকে তৈরি করে আনা হয় বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের মধ্যে পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এখন তা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে। অন্যদিকে, পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২ কি.মি. লেভেল ক্রসিংবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস ও ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দুই পাশের স্টেশন নির্মাণও চুড়ান্ত পর্যায়ে আছে। সিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এই রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply