শি জিনপিংয়ের আকস্মিক মস্কো সফর ঘিরে যতো সম্ভাবনা-আশঙ্কা

|

পরিস্থিতি যখন ব্যাপক উত্তাল, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যখন পশ্চিমাদের সাথে মস্কোর সম্পর্কের ফাটল অনেক দূর গড়িয়েছে, ঠিক তখনই আকস্মিক মস্কো সফরে গেলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রাশিয়া মিত্র দেশ হওয়ায় শি’র এই মস্কো সফর নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। শুধুই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন আর রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা, নাকি অন্য কোনো কারণও রয়েছে চীনা প্রেসিডেন্টের রাশিয়া সফরের? এমন নানা প্রশ্ন উঠেছে শি জিনপিং এর মস্কো সফরের পর। খবর রয়টার্সের।

অবশ্য যুদ্ধ বন্ধে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চেষ্টা করলে সফল হতে পারে বলে আশা রয়েছে বিশ্লেষকদের। অন্যদিকে বাণিজ্যিক স্বার্থকেও জিনপিংয়ের সফরের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরের ফলে বৈশ্বিক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হবে বলেও মনে করছেন অনেকে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রাশিয়ার সফরের পর এর পরবর্তী পরিণতি কী হতে পারে তাই নিয়ে চলছে নানা হিসাব নিকাশ আর চুলচেরা বিশ্লেষণ। সফরে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চীনের প্রেসিডেন্ট যে ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন কিংবা তার উদ্যোগ সফল হবে কিনা এসম্পর্কে আশাবাদী বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, তুরস্কের চেয়েও এক্ষেত্রে কার্যকর হবে চীনের প্রচেষ্টা।

মস্কোর রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু করইয়েবকো বলেন, বিবদমান দুই দেশের সমঝোতা বা মধ্যস্ততায় উদ্যোগী হওয়াটা চীনের জন্য নতুন কোনো ইস্যু নয়। সম্প্রতি ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে সেখানও মধ্যস্থতা করেছে বেইজিং। এক্ষেত্রে চীন সফল হওয়ার মূল কারণ হলো, এর অর্থনৈতিক প্রভাব। ফলে চির বৈরী যেকোনো দেশের মধ্যেই একটা বোঝাপড়া সৃষ্টি করতে পারে দেশটি। মস্কো-ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা না।

তবে সম্পর্ন্নয়ন কিংবা যুদ্ধ বন্ধের কথা বলা হলেও, চীনের এই প্রচেষ্টার পেছনে অন্য কারণও দেখছেন বিশ্লেষকরা। আলোচিত বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের সফলতার জন্যও বেইজিংয়ের এই মরিয়া দৌড়ঝাপ বলেও জানান তারা।

অ্যান্ড্রু করইয়েবকোর মতে, অবশ্যই চীন নিজেদের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক স্বার্থকে বড় করে দেখছে। তারা কোনোভাবেই চাইবে না এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হোক যাতে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প ঝুঁকির মুখে পড়ে। এ কারণেই বেইজিং চায় দ্রুত রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হোক।

এদিকে, শি জিনপিংয়ের সফরের ফলে বৈশ্বিক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনাও হিসেবেও দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে অ্যান্ড্রু বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রদের জন্য দুঃসংবাদ। কারণ শি-পুতিনের এই বৈঠক-আলোচনা নিঃসন্দেহে নতুন একটি বলয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শি জিনপিং রাশিয়াকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হিসেবে গণ্য করছেন। এমনকি যেকোনো সময় চীন ভারী সমরাস্ত্র সরবরাহ করতে পারে রাশিয়াকে। তাই বলা যায়, চীন-রাশিয়া এখন নতুন একটি যৌথ শক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।

এরআগে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ১২ দফা প্রস্তাব পেশ করে চীন। তবে তা মেনে নেয়নি পশ্চিমারা। ধারণা করা হচ্ছে, এই মস্কো সফরে সেই শান্তি চুক্তি নিয়েও আলোচনা করতে পারেন শি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply