বর্ণবাদ-নারীবিদ্বেষ: পুলিশের ওপর আস্থা নেই লন্ডনের অর্ধেক বাসিন্দার!

|

ছবি : সংগৃহীত

লন্ডনের পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বর্ণবাদ, স্বজনপ্রীতি ও নারীবিদ্বেষের মতো ভয়াবহ সব অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ বাহিনীর ওপর সরকারিভাবে একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এমন গুরুতর অভিযোগ। খবর রয়টার্সের।

খবরে বলা হয়েছে, ৩৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ লন্ডন পুলিশ। এছাড়া, শহরের অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা পুলিশের ওপর থেকে আস্থা হারিয়েছে। দেয়া হয়েছে সংস্কার প্রস্তাবও।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, প্রতিষ্ঠানটির তিন ভাগের এক ভাগ নারীই নাকি যৌন হয়রানি শিকার। বলা হচ্ছে, লন্ডনের অর্ধেক বাসিন্দারই আস্থা নেই বিশ্বখ্যাত এই পুলিশ বাহিনীর ওপর।

২০২১ সালে, পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় যুক্তরাজ্য জুড়ে। এরপরই, সরকারিভাবে শুরু হয় পুলিশ বিভাগের ওপর নিরপেক্ষ পর্যালোচনা। আর সেই পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এসব ভয়াবহ তথ্য।

হাউজ অব লর্ডস এমপি ব্যারোনেস লুইস কেসি বলেন, মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সবাই না হলেও বেশিরভাগই বর্ণবাদী। প্রতিষ্ঠানটির অনেকেই সহকর্মীদের কাছ থেকে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছে। জরিপ ও সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আর হ্যাঁ, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট।

গত কয়েকবছর ধরে একের পর এক সদস্যের অপকর্মের কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে লন্ডন পুলিশ। যদিও, ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে বাহিনীতে শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান। তবে, এই পর্যবেক্ষণ নতুন করে বিপাকেই ফেলেছে কর্তৃপক্ষকে।

লন্ডন পুলিশের কমিশনার মার্ক রোলে বলেন, আমরা লন্ডনবাসীকে হতাশ করেছি। এই প্রতিবেদনটি তা স্পষ্টভাবেই তুলে ধরেছে। এর জন্য গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। খারাপ অফিসারের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছি এই দাবি আমি করতে পারি না। তবে, আমি বলতে পারি, প্রতিদিনই আমরা তাদের নির্মূল করছি। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়াবহ সব অভিযোগে বিব্রত ব্রিটিশ সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, গোটা দেশেই পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, গেল একবছরে বেশ কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে আস্থা হারিয়েছে। আমাদের এখন এটা নিশ্চিত করা উচিত, ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হবে না। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের পুলিশ কমিশনার এটি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু লন্ডনেই নয়, সারাদেশের পরিবর্তন চলছে।

লন্ডন পুলিশে ব্যাপক পরিবর্তনের সুপারিশও করা হয়েছে পর্যবেক্ষণটিতে। বলা হয়েছে, বাহিনীটির বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দক্ষ নেতৃত্ব।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply