বিশ্ব বন দিবস আজ

|

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। নানা আলামত দেখা দিচ্ছে এরই মধ্যে। অসময়ে ঝড়-বন্যার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। অন্যদিকে বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে সবুজে ছেয়ে যাচ্ছে রুক্ষ মরুভূমি। এ সবই জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। আর এসব রুখতে এখন মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধুই হলো বনভূমি। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় বন বা বনভূমির তুলনা চলে না। তাই প্রতিবছরের ২১ মার্চ বিশ্বজুড়ে গুরুত্বের সাথে পালিত হয় বন দিবস।

মূলত মানুষকে গাছের গুরুত্ব বোঝাতেই দিবসটি পালিত হয়। এর মধ্যে বৃক্ষরোপনও অন্তর্ভুক্ত। গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের মতে, পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বনভূমি। একটি বনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ গাছ থাকে। একজন মানুষের শ্বাস নিতে বছরে ৭৪০ কেজি অক্সিজেন প্রয়োজন। গড়ে একটি গাছ বছরে ১০০ কেজি পর্যন্ত অক্সিজেন দেয়। ফলে মানুষের বেঁচে থাকা আর পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা একা হাতেই সামলায় বনাঞ্চলগুলো।

এ বিষয়টি মাথায় রেখে ১৯৭১ সালে ইউরোপীয় কনফেডারেশন অফ এগ্রিকালচারের ২৩তম সাধারণ পরিষদে বিশ্ব বনায়ন দিবস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বন দিবস প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দুটি আন্তর্জাতিক স্মারক বিশ্ব বন দিবস এবং আন্তর্জাতিক বন দিবসকে একত্রিত করে প্রতি বছর ২১ মার্চ দিবসটিকে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশেও প্রতিবছর পালিত হচ্ছে বন দিবস। বাংলাদেশের বন বিভাগের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বন আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী যা ছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। এই হিসাবে বনের বাইরের গাছ আমলে নেয়া হয়নি।

কিন্তু বন বিভাগের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বনের বাইরে গাছের পরিমাণ মোট ভূমির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এসব গাছের বেশির ভাগই বেড়ে উঠেছে মূলত সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে। সেই হিসাবে বনের ভেতর ও বাইরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির সাড়ে ২২ শতাংশ।

বন আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানুষ এবং বিভিন্ন আদিবাসী সংস্কৃতি তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বনের উপর নির্ভরশীল। প্রাণী এবং পোকামাকড়কে আশ্রয় দেয়া, বাতাসে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখা, নদীতে মিষ্টি পানি সরবরাহকারী জলাশয়গুলিকে রক্ষা করতে বনের গুরুত্ব অপরিসীম।

তাই সকলকেই বন তথা গাছের গুরুত্ব বুঝতে হবে। এ দিন আপনিও চাইলে গাছ লাগিয়ে দিনটিকে উদযাপন করতে পারেন। বাড়ির ছোটদের গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে জানাতে পারেন। কিংবা ঘুরে আসতে পারেন সুন্দরবনে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply