১৩ মেয়র প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

|

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা-২০১০ এর ৪৪ বিধির ৩ উপবিধি অনুযায়ী ভোটগ্রহণ বা ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর কোনও প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ৮ শতাংশ ভোট পেতে ব্যর্থ হলে তার জামানত সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। সোমবার অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচনে ১৯ জন মেয়র প্রার্থী ছিলেন। তাদের ১৩ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অর্থাৎ, বড় দু’দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা ছাড়া অন্য কেউ ভোটারদের সেভাবে আকৃষ্ট করতে পারেননি।

সিলেট সিটি কর্পোরেশন

সিলেটে ৩ লক্ষ ২১ হাজার ৭৩২ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৭টি। অর্থাৎ ৬১.৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর ৮ শতাংশ হিসেব করলে আসে ১৬ হাজারের কিছু কম ভোট। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়রপ্রার্থী বাদে বাকী ৫ প্রার্থীর সবাই সে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

ঘোষিত ফলে দেখা যায় জামায়াতের এহসানুল মাহবুব জুবায়ের পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৫৪ ভোট, ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পেয়েছেন ২ হাজার ১৯৫ ভোট, সিপিবি-বাসদের প্রার্থী আবু জাফর পেয়েছেন ৯০০ ভোট, বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম পান ৫৮২ ভোট, যদিও তিনি দলীয় পরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এহছানুল হক তাহের পেয়েছেন ২৯২ ভোট। এছাড়া স্থগিত দুটি কেন্দ্রের ভোটার ৪ হাজার ৮ শত ৭৭।

স্থগিত দুই কেন্দ্রের সবগুলো ভোট পেলেও এই পাঁচ প্রার্থীর কারোরই জামানত টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এছাড়া বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী তার নিকটতম আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ১৩২টি কেন্দ্রের মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট ও বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। ২০১৩ সালে আরিফুল হক ভোট পান ১ লাখ ৭ হাজার ৩৩০ আর বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পান ৭২ হাজার ২৩০ ভোট।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৩ প্রার্থী। সেখানে ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৮১টি, এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৬৯১ টি। মোট ৭৮.৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছে সেখানে। প্রদত্ত ভোটের ৮ শতাংশের কম ভোট পায়েছেন ইসলামী আন্দোলনের শফিকুল ইসলাম তার ভোট ৩ হাজার ২৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ৩২০ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ পেয়েছেন ১ হাজার ৫১ ভোট। বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের চেয়ে ৮৭ হাজার ৩৯৬ ভোট বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচনী হয়েছে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হজার ৯৬টি আর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট। ২০১৩ সালে রাজশাহীতে ভোটার ছিল ২ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৭ জন, তখন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ভোট পান ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ ও নিকটতম এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন পান ৮৩ হাজার ৭২৬। সেবার ৭৬.০৯ শতাংশ ভোট পড়ে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

বরিশালেও ৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৫ জন। মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩০০ টি। ভোট বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৪৫১ টি, ৬৩ শতাংশ ভোট পড়েছে সেখানে। ইসলামী আন্দোলনের ওবাইদুর রহমান মাহাবুব পেয়েছেন ৬ হাজার ৪২৩ ভোট। এছাড়া, বাসদের মনীষা চক্রবর্ত্তী পেয়েছেন ১ হাজার ৯১৭, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন পেয়েছেন ৬৯৬, সিপিবির আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ২৪৪, স্বতন্ত্র প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু পেয়েছেন ৮১ ভোট।

স্থগিত হওয়া ১৬টি কেন্দ্রের ভোট ৩১ হাজার ২৮৭ হলেও বিএনপি প্রার্থীর চেয়ে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্। তিনি ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৩৫৩টি। অন্যদিকে, বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩৫ ভোট। ২০১৩ সালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আহসান হাবীব কামাল ভোট পান ৮৩ হাজার ৭৫১ ভোট ও আওয়ামী লীগের সমর্থনে শওকত হোসেন হিরন পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৪১ ভোট।

যমুনা অনলাইন: এআর/টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply