শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিত না হলে রফতানি খাত পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের

|

মাহফুজ মিশু:

গ্যাসের দাম বাড়ালেও শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের নিশ্চয়তা নেই এখনও। আর তা না পেলে প্রতিযোগিতায় রফতানি খাত পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বলছে, স্পট থেকে এলএনজি আনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত। আন্তর্জাতিক বাজারও তুলনামূলক স্থিতিশীল। এ অবস্থায় সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে এক লাফে বৃহৎ শিল্পে গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করে জ্বালানি বিভাগ। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিলমাস ফেব্রুয়ারি থেকেই প্রায় তিনগুণ বাড়তি দাম গুণতে হবে । প্রায় একই হারে বাড়ানো হয়েছে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম।

নতুন দাম ঘোষণার আগে দফায় দফায় শিল্প মালিকদের সাথে বৈঠকে উঠে আসে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের কথা। ইউনিট প্রতি দাম ২২ টাকা করা হোক তা চেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা; যদিও তা হয়নি।

আন্তর্জাতিক বাজারের দাম, পরিবহন সময়সহ আনুষঙ্গিক নানা বিষয় বিবেচনায় কিনতে পারলেও আমদানি করা এলএনজি নির্ধারিত সময়ে আসবে কিনা, তৈরি হয়েছে সেই শঙ্কা।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, সরবরাহের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সরবরাহ যদি না হয়, তাহলে ফ্যাক্টরিগুলো চালু থাকবে না। কীভাবে নিরবিচ্ছিন গ্যাস সরবরাহ করা যায়, সেটা সরকারের চিন্তা করতে হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়টি বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মেনে নিয়েছে, যেহেতু এফবিসিসিআই থেকে একটা প্রস্তাব গিয়েছে। তাই দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এসেছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, রেশনিং করতে হলেও শিল্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস দেয়া সরকারের অগ্রাধিকার। নতুন করে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম না বাড়ায় সংকট হবে না বলে আশাবাদী জ্বালানি বিভাগ।

নসরুল হামিদ বলেন, প্রথমত আমরা চাচ্ছি, ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সমন্বয় করা শুরু হবে। দ্বিতীয়ত, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা। স্পট থেকে গ্যাস কিনতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি এবং কিছু টাকা অগ্রিম দেয়াও হয়েছে। আমরা ফেব্রুয়ারি থেকে যদি সমন্বয় না করি, অ্যাডভান্স দিতে পারবো না। দাম আর সময়ের মধ্যে গ্যাপ থাকলে আমরা গ্যাস আমদানি করতে পারবো না।

ডলার সংকটসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে রফতানিমুখী শিল্পকারখানার উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, রফতানিমুখী পণ্যের দাম প্রতিযোগিতামূলক রাখতে হবে। তা রাখতে গেলে বিদ্যুৎ, জ্বালানির দামের প্রভাব তাতে পড়বে। সরকার যেন সেটা মাথায় রাখে।

নসরুল হামিদ বলেন, মার্চ থেকে পরিস্থিতি আরও ভালোর দিকে যাবে। স্পটে আগের থেকে দামও কমেছে কিছুটা। আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে দাম আরও কমলে আরও বেশি কেনা যাবে।

এদিকে, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতে আর কোনো ভর্তুকি দেবে না বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply