‘১৯ ঘণ্টা হয়ে গেছে, আমার দাদা-দাদী এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে’

|

ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে হওয়া ভূমিকম্পে মানবেতর অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন হাজার-হাজার মানুষ। একদিকে চলছে উদ্ধার অভিযান, অন্যদিকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া জনপদে মিলছে কেবল লাশ আর লাশ। কান্না ও আহাজারির শব্দ চারিদিকে। এই দুর্যোগের সময়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে তীব্র ঠান্ডায় খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে তুরস্কের হাজারো মানুষ। তেমন একজনের হাহাকার, ১৯ ঘণ্টা হয়ে গেছে। আমার দাদা-দাদী এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে! সিবিসি রেডিও’র খবর।

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র ঠান্ডা আর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের মাঝে কাটছে তাদের মানবেতর জীবন। অক্ষত কোনো বাড়িতে আশ্রয় নিতেও ভয় পাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। কেননা, একটার পর একটা আফটারশক হয়েই যাচ্ছে। তাতে, যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বাড়ির ছাদ। খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে কোনোভাবে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় শিশু আর প্রবীণদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেয়েছেন ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ। আন্তর্জাতিক সহায়তার আশ্বাস পেলেও এখনও হাতে পৌঁছায়নি জরুরি ত্রাণ। যে কারণে, বেশিরভাগ মানুষই সবকিছু হারিয়ে রাত কাটিয়েছেন অভুক্ত।

সিবিসি রেডিওর সাথে কথা বলেছেন তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র বারিস ইয়াপার। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতটি তিনি বাবা-মার সাথে কেবল প্রার্থনা করেছেন, উদ্ধারকর্মীরা যেন তার দাদা-দাদীকে খুঁজে বের করে। সামানদাগে তাদের অ্যাপার্টমেন্টটি ধূলোয় মিশে গেছে। তীব্র ঠান্ডায় অন্ধকার রাতে ক্ষীণতম আশার খোঁজে থাকা ইয়াপার বলেন, যেমনটা ভেবেছিলাম সেরকম সাহায্য পাচ্ছি না। আরও অনেকের মতোই অন্ধকার ও ঠান্ডায় বসে আছি। সবাই কিছু না কিছু করার চেষ্টা করছে। ১৯ ঘণ্টা হয়ে গেছে। আমার দাদা-দাদী এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে!

ছবি: সংগৃহীত

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৩শ’ ছাড়িয়েছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে উদ্ধার অভিযান। এদিকে, এই ভূমিকম্পে দেশ দুইটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ত্রিশ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়া শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দেশ দুইটিতে ধ্বংসস্তুপের মাঝে চাপা পড়ে আছে হাজার হাজার মানুষ। কেবল তুরস্কেই উদ্ধার হয়েছে ২৪শ’ এর কাছাকাছি মরদেহ। ১০ প্রদেশে আহত সাড়ে ১৪ হাজার মানুষ। আর সিরিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ১৫শ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত প্রায় আড়াই হাজার।

আরও পড়ুন: তুরস্ক-সিরিয়ার পাশে দাঁড়ালো আন্তর্জাতিক মহল

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply