তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ ছাড়ালো। তুরস্কে ১ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। আর সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন ৭ শতাধিক। আহত পাঁচ হাজারের বেশি। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো আটকে রয়েছেন অনেকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরও অনেক প্রাণহানির সংখ্যা বাড়তে পারে। খবর আলজাজিরার।
স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে অনুভূত হয় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার কম্পন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ। সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে ছড়ায় আতঙ্ক। জোরালো কম্পনে ধসে পড়ে সুউচ্চ দালানকোঠা। ঘুমের মধ্যেই ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়েন বহু মানুষ।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পনটি অনুভূত হয়। যার স্থায়িত্ব ছিল ৪৫ সেকেন্ডের মতো। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর গাজিয়ানতেপ। এর উৎপত্তি ছিল ভূ-ভাগ থেকে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পের ধাক্কা অনুভূত হয়েছে রাজধানী আঙ্কারাসহ আরও ১০টি তুর্কি শহরে। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অনুভূত হয় অন্তত ৪২টি আফটারশক। যার সবগুলোই ছিল ৬ মাত্রা বা তার ওপর।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোইলু জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০টি শহর- গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিস। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সময়ের সাথে সাথে হতাহতের সংখ্যা বাড়বে।
তিনি বলেন, ভোর সোয়া চারটা নাগাদ হয়েছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। কেন্দ্র গাজিয়ানতেপে হলেও রাজধানীসহ কমপক্ষে ১০ শহরে অনুভূত হয় কম্পন। অনেকগুলো আফটারশক রেকর্ড করা হয়, যা শুধুই ধ্বংস ডেকে এনেছে। কেন্দ্রীয় সরকার, প্রত্যেক রাজ্য প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড, উদ্ধারকর্মীরা সবাই তৎপর। দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রিসেন্টও।
উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, সিরিয়ার ভূখণ্ড বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাণহানিও সেখানে বেশি। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সীমান্তের আজমারিন শহর। তাছাড়া, ক্ষয়ক্ষতির শিকার আলেপ্পো, লাতাকিয়া ও হামা শহরও। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটের দাবি, ধ্বংসাবশেষ সরানো গেলে বাড়বে প্রাণহানি। প্রতিবেশী লেবানন আর সাইপ্রাসেও অনুভূত হয়েছে কম্পন।
উল্লেখ্য, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা বরাবরই ভূমিকম্প প্রবণ। ১৯৯৯ সালে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রাণ হারান ১৭ হাজারের বেশি মানুষ।
ইউএইচ/
Leave a reply