এবার ঋণের শর্তগুলো স্পষ্ট করলো আইএমএফ

|

এতোদিন অস্পষ্ট থাকলেও এবার সুনির্দিষ্ট শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ। ঋণের অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে হবে একগুচ্ছ এজেন্ডা। কমাতে হবে ভর্তুকি এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি। শুধু প্রতিশ্রুতিই নয়, রাজস্ব আদায়েও বেঁধে দেয়া হয়েছে দিনক্ষণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, শর্ত নির্দিষ্ট করে দেয়ায় সরকারকে মাসিক ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি।

প্রতিশ্রুত ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। অর্থ ছাড়ের দুই দিনের মাথায় ঋণের শর্ত খোলাসা করেছে সংস্থাটি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি এবং আর্থিক খাতের সংস্কারের নানাদিক। বলা হয়, প্রতিবছর কর জিডিপির হার বাড়াতে হবে শূন্য দশমিক ৫০ ভাগ। সঞ্চয়পত্র এখন যা বিক্রি হচ্ছে তার এক ভাগে নামিয়ে আনতে হবে। এতে সরকারের ভর্তুকি কমবে। ডলারের দর রাখতে হবে একক। প্রশ্ন হচ্ছে শর্ত পরিপালনে কী কৌশল দরকার?

এ নিয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এই নিয়ম মেনে বিভিন্ন সংস্থার একটি মাসিক কর্মপন্থা তৈরি করা দরকার এবং নিয়মিত ভিত্তিতে নিজেরা বসে এটির অগ্রগতি দেখা প্রয়োজন।

আইএমএফ বলছে, জিডিপির হিসেব প্রকাশ করতে হবে তিন মাস পর পর। এছাড়া নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের হিসেব প্রকাশ করতেও শর্ত দিয়েছে এই সংস্থা। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোর কৌশল কতোটা সঠিক তা নিয়ে কথা বলেছেন খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা নিলে এই ভর্তুকি কমানোর চাপ ভোক্তার ওপর পড়তো না। এক্ষেত্রে, অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদনে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। একই সাথে বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্টে না দিয়ে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পে’ এই চুক্তির আলোকে যদি সকল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে নিয়ে আসা যায়, সেক্ষেত্রে ভোক্তার ওপর চাপ কমানোর বিকল্প সুযোগ তৈরি হবে।

ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমাতে দৃশ্যমান সংস্কার উদ্যোগ চায় আইএমএফ। বলা হয়েছে, ঋণের একক সুদ হার তুলে বাজার ভিত্তিক করতে হবে। এ নিয়ে অর্থনীতি বিশ্লেষক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই পরিস্থিতিতে হাওড়ে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করে প্রকল্প করার দরকার নেই। হাজার হাজার কোটি টাকার সমমূল্যের ডলার দিয়ে ইভিএম মেশির কেনারও কোনো প্রয়োজন নেই।

মোট ২১টি বিষয়ে সংস্কার এবং পরামর্শ তুলে ধরেছে আইএমএফ। সংস্থাটি বলছে, এর ফলে সামাজিক এবং উন্নয়ন কাজের ব্যয় বাড়াতে অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply